ঝালকাঠি সদর উপজেলা পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী গ্রামের শাহাদাত হোসেনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজন হলেন দেউরী গ্রামের গিয়াস মল্লিক, কিস্তাকাঠি গ্রামের শাহীন ভূঁইয়া ও মির্জাপুর গ্রামের জয়নাল কাদি। তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোহরাব হোসেন নামের এক আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় শাহীন ও জয়নাল উপস্থিত ছিলেন। তবে জামিনে থাকা গিয়াস মল্লিক আদালতে যাননি। তাকে দুপুরে এলাকায় দেখেছেন অনেকে। রায় ঘোষণার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মান্নান রসুল নিউজবাংলাকে জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল টিনের দোকানের ম্যানেজার শাহাদাৎ হোসেনকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট এলাকায় জয়নালের বাসায় নিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরে তার মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। মাথাহীন মরদেহ ফেলে দেয়া হয় সুগন্ধা নদীতে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল দুপুরে নদী থেকে শাহাদাতের মাথাহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই দিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ঝালকাঠি থানায় পুলিশ বাদী মামলা হয়। পরে মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হলে চারজনকে আসামি করে শাহাদাতের ছেলে সুমন হোসেন মামলা করেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে সুমন হোসেন বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত আসামি গিয়াস মল্লিকের বাবা মোকছেদ আলী মল্লিককে ১৯৮০ সালে হত্যা করে তার প্রতিপক্ষরা। সেই মামলায় আমার বাবাকে তারা আসামি করেছিলেন।
‘কিন্তু আমার বাবাকে খালাস দিয়েছিল আদালত। সেই শত্রুতার জেরে আমার বাবাকে গিয়াস মল্লিক হত্যা করে নদীতে ফেলে দেন।’
আদালত ৩৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী আবদুল মান্নান রসুল। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হুমায়ুন কবির বাবুল ও ফয়সাল খান।