ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-অ্যাগ্রো ইরিগেশন সবুজ সেচ প্রকল্পের ড্রেন ভেঙে শতাধিক বিঘার ইরি ধানের জমি তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে সরিষা খেত।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের সোহাগপুর জুলফুর বাড়ির পাশে ড্রেন ভেঙে যায়।
সেচ প্রকল্পের কুলিং রিজার্ভার পুকুর ভরাটের ফলে আয়তন কমে যাওয়া এবং মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ চলতে থাকায় মহাসড়কের পাশে ড্রেন ছোট হয়ে যায়। এতে পানি ঠিকমতো সরতে পারে না। এ কারণে পানি জমে জমে একপর্যায়ে চাপে ড্রেন ভেঙে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উপজেলার //সাহাগপুর এলাকায় ড্রেনের উত্তর পাশের একটি অংশ ভেঙে পানির তীব্র বেগে ফসলের মাঠে ঢুকতে শুরু করে। কমপক্ষে ৫০ একর জমির ইরি ধান ও পাকা সরিষা খেত তলিয়ে গেছে। স্রোতের সঙ্গে প্রচুর বালু যাওয়ায় জমির ফসল শতভাগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সেচ প্রকল্পের আশুগঞ্জ উপজেলার রেলগেট এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের পুকুরটি ছিল প্রধান রিজার্ভার। গত বছর পুকুরটির প্রায় ৭৫ ভাগ ভরাট করে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। ফলে রিজার্ভার পুকুরের আয়তন কমে যাওয়ায় পানির ধারণক্ষমতা কমে গেছে।
এদিকে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউরা স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজে মাহাসড়কের পাশে প্রায় ১১ কিলোমিটার ড্রেন-খাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। অন্য বছর যেখানে প্রায় ৩০/৪০ ফুট প্রশস্ত ড্রেন-খাল দিয়ে সেচের পানি প্রবাহিত হতো, বর্তমানে কোনো কোনো স্থানে ৪/৫ ফুট নালায় পরিণত হয়েছে। পানির চাপে বালুতে ড্রেনের গভীরতা কমে যায়। পরে চাপের মুখে ড্রেন ভেঙে যায়।
চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর, আশুগঞ্জ, সরাইল ও নবীনগর উপজেলার প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেয়া ও প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে গত মাসে সেচের পানি অবমুক্ত করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবুল কাসেম জানান, তার মোট ১৭-১৮ বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইরি ধান ও সরিষা।
জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, তার ৯-১০ বিঘা সরিষা খেত তলিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের আওতা ব্যাপক। কিন্তু চার লেন প্রকল্পের কাজে সেচ প্রকল্পের ড্রেন ছোট হয়ে গেছে। উজানে পানি পৌঁছানোর জন্য ড্রেনে পানির চাপ বেশি পড়ায় তা ভেঙে গেছে। খবর পেয়ে পানির পয়েন্ট বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খাঁন বলেন, ‘বিএডিসির প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বলেছি ভেঙে যাওয়া ড্রেন দ্রুত মেরামত করার জন্য।’