বরগুনায় শামীম ইমতিয়াজ বাদশাহ নামের যুবলীগের এক কর্মী হত্যা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান।
উচ্চ আদালতের দেয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আবার জামিনের জন্য বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাসানুল ইসলামের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেয়।
জামিন শুনানির সময় আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিকুর রহমানের ভায়রা বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে সিদ্দিকুর রহমানসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইয়াসির আরাফাত।
২০১৯ সালের ৮ জানুয়ারি রাতে বুড়িরচর ইউনিয়নের কামরাবাদ এলাকায় যুবলীগ কর্মী শামীম ইমতিয়াজ বাদশাহকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন ৯ জানুয়ারি বাদশাহর বাবা সোহরাব মৃধা ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
যুবলীগ কর্মী নিহত শামীম ইমতিয়াজ বাদশাহ
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে গ্রেপ্তারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এই মামলার ৪ নম্বর আসামি মো. রাকিব।
পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৭ জানুয়ারি বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।
অভিযোগপত্রে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানকে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, ‘আমাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সিদ্দিকুর রহমানের ১০ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে।’
এ সময় আসামিপক্ষের জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল মোতালেব, অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান নান্টু প্রমুখ।
এ বিষয়ে মামলার বাদী সোহরাব মৃধা বলেন, ‘আমার একমাত্র সন্তান হত্যার নির্দেশদাতার জামিনের খবর আমি শুনেছি। এতে আমি হতাশ হয়েছি।
‘তারপরও আমি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’ আসামির স্বজনরা তাকে ও তার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় আছি। দ্রুততম সময়ে আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।’