সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজার বাকি আর মাত্র চার দিন। উৎসব সামনে রেখে বরিশাল নগরীর মন্দিরে মন্দিরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
প্রতি বছরই মন্দিরের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়ও হয় বিদ্যার দেবীর পূজা। এসব পূজার জন্য যেসব কারিগর প্রতিমা বানান তাদের মুখে নেই হাসি। কারণ, সরস্বতী প্রতিমা তৈরি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও করোনার কারণে ক্রেতা সংকটে ভুগছেন তারা।
নগরীর ভোলানন্দ গিরি আশ্রমের সরস্বতী প্রতিমা তৈরির কারিগর খোকন পাল জানান, গত বছর বাণী-অর্চনার জন্য ১৪০টি প্রতিমা তৈরি করেছিলেন। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এই বছর করেছেন ১০০টি। তারপরও সবকটি বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহে রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘১ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা দামের প্রতিমা রয়েছে আমার কাছে। অর্ধেক প্রতিমার অর্ডার আসলেও বাকি অর্ধেক নিয়ে চিন্তায় আছি। কারণ কোনো ক্রেতাই আসছেন না। তাছাড়া করোনার কারণে ভালো দাম পাওয়া যাবে কি না তা নিয়েও শঙ্কায় আছি।’
নগরীর নতুনবাজার এলাকার প্রতিমা কারিগর নির্মল দাস বলেন, ‘প্রত্যেক বছর মুই ২০টের মতো প্রতিমা বানাই। তয়, এইবার অর্ডার ছাড়া প্রতিমা বানাই নাই। টাহা (টাকা) দিয়ে প্রতিমা বানাইয়ে হেসে (পরে) ব্যাচতে (বিক্রি করতে) না পারলে মোর (আমার) তো পুরাই লস (লোকসান)।’
হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও বরিশাল মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুরঞ্জিৎ দত্ত লিটু বলেন, পূজা উপলক্ষে প্রায় সব মন্দিরেই আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করা হয়েছে। এবারে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পূজা আয়োজনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মণ্ডপগুলোকে।
নগরী ঘুরে দেখা গেছে, এ বছরও শ্রীশ্রী শংকর মঠ, রামকৃষ্ণ মিশন, ঝাউতলা পূজা মণ্ডপসহ বেশির ভাগ মন্দিরেই সরস্বতী পূজা হবে। অনেক এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগেও পূজার আয়োজন করা হয়েছে। তবে, অন্যান্য বছরের তুলনায় এই বছর আয়োজন সীমিত পরিসরে করার চিন্তা করছেন সবাই।