শীতের শেষবেলায় শেরপুরে শিশুদের ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে শিশুরোগীদের ভিড় বেড়েই চলেছে। এতে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন।
এ জেলায় শীতের প্রকোপ সাধারণত বেশি থাকে। কিন্তু সম্প্রতি শীতের তীব্রতা কমে আসছে। পাওয়া যাচ্ছে গরমের আভাস। আর আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময় জেলার সর্বত্র দেখা যাচ্ছে নানা রোগের প্রকোপ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে শিশুদের ডায়রিয়া।
অভিভাবকরা ঘরোয়া পরিবেশে শিশুদের ডায়রিয়ার চিকিৎসা করলেও রোগ ভালো হচ্ছে না। তাই তারা ছুটছেন হাসপাতালের দিকে। হাসপাতালের আউটডোর ও ইনডোরে শিশু রোগীদের ভিড়।
শেরপুর ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালের আরএমও খায়রুল কবীর সুমন নিউজবাংলাকে জানান, বুধবার রাত পর্যন্ত ৫৮ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৪০০ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫০ শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। ভর্তি ছাড়াও অনেক শিশুকে আউটডোরে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
তবে আউটডোরের সঠিক হিসাব দেয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।
শেরপুরের সিভিল সার্জন একেএম আনোয়ারুর রউফ জানান, গত এক সপ্তাহে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এক হাজারের বেশি শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। শুধু শেরপুর জেলা হাসপাতালেই প্রতিদিন অর্ধশতাধিকের বেশি শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। এ ছাড়া আউটডোরে শত শত শিশু রোগী চিকিৎসা তো নিচ্ছেই।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর উপজেলার রামখিলা বটতলার শিশু সুবর্ণার দাদি বলেন, ‘আমার নাতি সুবর্ণর তিন দিন দইরে ডায়রিয়া অইছে। গেরামো ডাক্তর দেহাইছি। বালা অয়নাই। তাই হাসপাতালে নিয়াইছি। এহন একহানি বালা অইছে।’
শিশু রাবেয়ার মা রোজিনা জানান, ‘আমার মাইয়ারে তিন দিন দইরে হাসপাতালে নিয়াইছি। এহন বালা অইতাছে। আমাগো এলাকায় অনেক পোলাপানের ডায়রিয়া অইছে।’
হঠাৎ করে শিশুদের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। এ প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
হঠাৎ করে এভাবে শিশুদের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।
অবশ্য সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে দেখছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা প্রস্তুত আছেন।