বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ‘স্বেচ্ছাচারী চাঁদাবাজি’

  •    
  • ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৯:৫৮

পাথালিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নয়নের বিরুদ্ধে উঠেছে চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ। যদিও সব মিথ্যা দাবি করেছেন এই নেতা।

ঢাকার সাভার উপজেলার পাথালিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নয়নের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, চাঁদা দিতে রাজি না হলে করা হয় নির্যাতন।

হামলার শিকার ব্যক্তিরা মামলা করেও কোনো বিচার পাননি। দলীয় প্রভাবে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন কামরুল।

আশুলিয়া থানা থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৮ সালের ১৬ আগস্ট চাঁদাবাজি ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলাম নয়ন। এ মামলায় তার সঙ্গী ফেরদৌস আলম ও ইউসুফ আলীসহ অজ্ঞাত পরিচয় চার থেকে পাঁচ জনকে আসামি করা হয়।

এ ছাড়াও নয়ন ও মো. নিলয় নামের দুজনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর লুটপাটের মামলা করেন নজরুল ইসলাম নামে এক দোকানি।

এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পানধোয়া এলাকায় বাড়ি নির্মাণের সময় চাঁদা না দেয়ায় শামীম শেখ নামের এক বাসিন্দা নয়ন ও তার বাহিনীর হামলার শিকার হন।

শামীম শেখের ছেলে রনির মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়ে আহত করেন নয়ন। ছবি: নিউজবাংলা

শামীম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নয়ন আমার বাড়িতে ঢুকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় সে আমার ছেলে রনির মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দিয়েছে। আরেক ছেলে ফয়সালের মাথায়ও রড দিয়ে আঘাত করে জখম করেছে।

‘আমার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাকেও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। এখনও আমার দুই ছেলে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি কিন্তু পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।’

একই এলাকার চায়ের দোকানি নজরুল ইসলাম দুই মাস আগে নয়নের আক্রমণের শিকার হন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছে ডেইলি এক পেকেট ফ্রি সিগারেট চায় হেই (নয়ন)। পরে আমি দেই নাই দেহি আমার দোহানু থাকি আমারে ডাইকি হেই অফিসে নিয়া যায়। পরে হের অফিসে গেলে হেই শাটার ফালায় দিয়া কুনু বোঝার আগেই আমারে বাড়ি মারে।

‘আমি দুই হাতে ধরছি বাড়িডা। পরে আমার হাতে-পায়ে রড দিয়া মারছে। বহুদিন হাসপাতালে গেছি, ওষুধ খাইছি। এহুনু (এখনও) আমার পায়ো (পা) ঠিক হয় নাই। মামলাও করছিলাম। কিন্তু হেই (নয়ন) আগেই জামিন নিয়া আয়া পড়ছে।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নয়নের হামলার শিকার হয়েছেন ওই এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী কার্তিক চন্দ্র ঘোষও।

কার্তিকের অভিযোগ, ২০১৮ সালের ১৫ আগস্ট পানধোয়া বাজার এলাকায় পূর্ণ জুয়েলার্সে ৫০ হাজার টাকা চাঁদার জন্য হামলা চালায় নয়ন ও তার বাহিনী। দোকানে থাকা দুজনকে জখম করে লুট করা হয় স্বর্ণালঙ্কার। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন কার্তিক।

পানধোয়া বাজার সমিতির সভাপতি এরশাদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নয়ন মাঝে মধ্যে বাজারের ব্যবসায়ীদের ওপর নির্যাতন চালায়। গরিব চায়ের দোকানদারও তার হাত থেকে রেহাই পায় না।

‘বিভিন্ন সময় তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসী মিলে মানববন্ধন করেছি। কিন্তু আমরা কোনো সুফল পাইনি বরং বারবার তার অত্যাচারের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। মূলত পুলিশ ও দলগতভাবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে পাথালিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নয়ন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টা হচ্ছে ভাই আপনারে আমি কী বলব। আমার ভাষা আমি হারাই ফালাইছি। এই মারামারির (শামীম শেখের অভিযোগ) সম্বন্ধে আমি কিছুই জানি না। আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আছে, তারা এই হ্যাস্তন্যাস্তটা করতেছে।’

আরও দুটি চাঁদাবাজি মামলার বিষয়ে বলেন, ‘আমার এলাকায় রিকশায় চাঁদা উঠাইত। ওই চাঁদাটা আমি বন্ধ করাইছি। সেটা রিকশাওয়ালাদের ডাইকা বইলেন। কাঁচাবাজারের চাঁদাটা আমি বন্ধ করছি ভাই। আর এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়েই আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা মামলা দিছে।’

আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শহীদুল্লাহ মুন্সী বলেন, ‘কিছু করলে তো আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। আমাদের কাছে তো কোনো অভিযোগ আসে নাই। অভিযোগ আসলে আমরা তদন্ত করে দেখব, সে কার কার মাথা ফাটাইছে। কাদের মেডিকেলে ভর্তি করছে। এসব প্রমাণ হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

‘যদি আইনিভাবে অপরাধী হয় তাহলে তো তার জেল দেবে না কি? জেল খেটে আসুক। আমরা তো অপরাধীদের কখনও ছাড় দেবো না।’

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ‘‌পানধোয়া বাজারে চাঁদার জন্য বাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও মারধর করে জখমের অভিযোগ পেয়েছেন।

‘বিষয়টি এখনও উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন তদন্ত করে দেখছে। আমি তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে কথা বলে দেখছি।’

এ বিভাগের আরো খবর