গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় শিশুমৃত্যুর প্রতিবাদ করায় স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে। এবার রোগীর স্বজনদের বিরুদ্ধে কর্মী লাঞ্ছিতের অভিযোগ এনে কর্মবিরতিতে গেছেন চিকিৎসকরা।
বুধবার সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরি ও বহির্বিভাগ বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। হাসপাতালের টিকেট কাউন্টার ও ওষুধ সরবরাহের কাউন্টারও বন্ধ রাখা হয়েছে।
এতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। মুমূর্ষু রোগীকেও ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিবুর নামের ওই শিশুর মৃত্যু হয়। পরে শিশুটির বাবা বকুল মিয়া ভুল চিকিৎসায় ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন।
বকুল মিয়া জানান, বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ে হাসিবুর। হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুজন পাল তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে চিকিৎসক ইনজেকশন দেয়ার পর মুখ দিয়ে ফেনা আর নাক দিয়ে রক্ত বের হয় হাসিবুরের। এর কিছুক্ষণ পরই মারা যায় আমার ছেলে।’
শিশুটির বাবা অভিযোগ করেন, ছেলের মৃত্যুর পর ইনজেকশনের কথা তুললে তাদের ওপর চড়াও হন হাসপাতালের কর্মীরা। পরে বাইরে থেকে কয়েক জন এসে তাদের মারধর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়।
তবে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করেন গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হারুন-অর-রশিদ।
তিনি বলেন, রোগীকে সাসপেক্টেড পয়জনিং হিসেবে চিকিৎসা দেয়া হয়। ভর্তির কিছু সময় পর শিশুটিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে রেফার করা হয়।
‘কিন্তু রোগীর স্বজনরা সেখানে না গিয়ে এখানে চিকিৎসা নেয়ার সম্মতি দেয়। দুই ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতালে সে মারা যায়।
আরএমও আরও বলেন, ঘটনার পর রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে চিকিৎসক-নার্সদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এরই প্রতিবাদে সকাল থেকে হাসপাতালের জরুরি ও বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে।
এদিকে শিশু হাসিবুরের মৃত্যুর ঘটনায় বুধবার দুপুরে সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, শিশুটির মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।