কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় নার্স-চিকিৎসক থাকলেও দুজন জনপ্রতিনিধির টিকা পুশ করার ঘটনা তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম।
বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, এখন সবাই টিকাদান নিয়ে ব্যস্ত, ব্যস্ততা কমলে ঘটনার তদন্ত করা হবে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার পরে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে দেখা যায়, কুমারখালী-খোকসা আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান টিকা পুশ করছেন।
অবশ্য দুজনই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, তারা শুধু সিরিঞ্জে হাত দিয়ে ছবি তোলার জন্য পোজ দিয়েছেন। টিকা পুশ করেছেন নার্সরা।
ভিডিও নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়। বিষয়টি কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জনের নজরে আনা হলে তিনি বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের খুলনা অঞ্চলের পরিচালককে জানিয়েছেন বলে জানান।
- আরও পড়ুন: নার্স নয়, টিকা দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
সিভিল সার্জন আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ওটা আমরা তদন্ত করব, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা কী বলেন, সে জন্য কয়েক দিন অপেক্ষা করছি। খুলনা বিভাগের পরিচালককে টেলিফোনে জানিয়েছি।’
সিভিল সার্জন বলেন, ‘আমাদের দক্ষ টিকাদান কর্মী আছেন। অন্যদের টিকা দেয়ার দরকার ছিল না। যারা টিকা দিয়েছেন, তারা এখন অস্বীকার করছেন, যদিও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তারাই টিকা দিয়েছেন।’
ভাইরাল ভিডিওতে দুই জনকে টিকা পুশ করতে দেখা গেছে কুমারখালী-খোকসা আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে। সেখানে এক নার্সেরও হাত ছিল।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নিজে টিকা পুশ করেননি, এমনকি এই বিষয়টিকে ইস্যু করা হচ্ছে বলে দাবি করেন এমপি জর্জ।
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু উদ্বোধন করেছি। নার্সের হাতেই সিরিঞ্জ ছিল, পুশ করার সময় সবার অনুরোধে সিরিঞ্জের ওপরে হাত লাগিয়েছি যাতে উনারা উৎসাহিত হন।’
এমপি জর্জ বলেন, ‘আমি ডাক্তারও না অ্যান্ড নট ইমম্যাচিউরড। একটা নন ইস্যুকে শুধু শুধু ইস্যু করা হচ্ছে।’
টিকা পুশ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানও। তিনি বলেন, ‘আমি টিকা পুশ করিনি। নার্সরা পুশ করেছেন, আমি সিরিঞ্জটা ধরেছি আর বের করেছি। ফটোসেশনের জন্য অনুরোধে আমরা ধরেছি, আর ফাঁকা সিরিঞ্জ বের করেছি।’
এমপি জর্জ নিজে টিকা পুশ করেননি বলে দাবি করেছেন কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন। অবশ্য উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা পুশ করেছেন বলে জানান তিনি।
আকুল উদ্দিন বলেন, ‘এমপি মহোদয়সহ টিকাদানের উদ্বোধন করা হয়। এ সময় আমাদের কর্মীরাই টিকা দেন। তবে, সাংবাদিকদের অনুরোধেই তিনি সিরিঞ্জে হাত দেন। এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় (আব্দুল মান্নান খান)।
‘আমি এমপি মহোদয়কে বিদায় জানাতে যাই, এই ফাঁকে উপজেলা চেয়ারম্যানও ফটোসেশন করবেন বলে উনি টিকা দিয়েছেন। ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না।’