বরিশালের মুলাদীতে শ্বশুরবাড়ি থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনির সিকদার নিখোঁজ হন গত ১২ জানুয়ারি। অনেক খোঁজ করেও না পাওয়ায় তার পরিবার মুলাদী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ২৬ জানুয়ারি।
তবে স্বজনরা এখন বলছেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মনিরকে পিটিয়ে মেরে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে বেঁধে পিটিয়ে মারার ছবিও দেখেছেন বলে দাবি স্বজনদের। এ ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
২৬ জানুয়ারি মুলাদী থানায় নিখোঁজ মনির সিকদারের স্ত্রী পলি বেগমের করা জিডির সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার কয়েরিয়া এলাকার মৃত নূর মোহাম্মদ সিকদারের ছেলে মনির সিকদার (৪০) একজন মানসিক ভারসাম্যহীন।
বিয়ের পর থেকেই মনির সিকদার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মুলাদী থানার নাজিরপুর ইউনিয়নের রামারপোল এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। ১২ জানুয়ারি বেলা ১১টায় তিনি ঘর থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও মনিরের স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজ না পেয়ে সর্বশেষ থানায় এসে জিডি করা হয়।
মনির সিকদারের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘মনির এর আগেও কয়েকবার বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিল, আবার নিজ থেকেই ফিরে এসেছে। আমরা প্রথমে শুনতে পাই, বালি মদন এলাকায় মনিরকে মারধর করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে ৫ ফেব্রুয়ারি ওই এলাকার জয় বাংলা বাজারে গিয়ে জানতে পারি, তাকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এলাকার লোকজনের কাছ থেকে জেনেছি, জয় বাংলা বাজারসংলগ্ন ভ্যানচালক আবুল হোসেনের বাড়িতে পানি পান করতে যায় মনির। আবুল হোসেনের ছেলে কাচের গ্লাসে করে তাকে পানি দেন। হঠাৎ করে আবুল হোসেন ঘরের মধ্যে ঢুকে মনিরকে মারধর করবে এমন কথা বললে সে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্লাসে থাকা অর্ধেক পানি আবুল হোসেনের শরীরে নিক্ষেপ করে।
‘এতে আবুল হোসেন ও তার ছেলে মনিরকে মারধর করলে সে-ও তাদের দুইজনকে মারধর করে। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে মনিরকে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তার লাশ গুম করে ফেলা হয়। তার হাত বেঁধে রাখার ছবি ফেসবুকেও দেখেছি। বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানিয়েছি। মামলা করার প্রস্তুতিও চলছে।’
এ ব্যাপারে বরিশালের মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়েজ উদ্দীন বলেন, ‘মনির সিকদারের নিখোঁজের বিষয়টি শুনেছি এবং থানায় জিডিও হয়েছে। তবে তাকে হত্যার কোনো তথ্য আমরা পাইনি। তাকে মারধরের বিষয়টিও শুনেছি, তবে কোথায় সে ঘটনা ঘটেছে, সেটা স্বজনরা বলতে পারছেন না। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।’