লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ছেলেকে গরু চোরের অপবাদ দিয়ে বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগটি উঠেছে ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
তার বাড়িতে থাকা ‘টর্চার সেলে’ শনিবার এই নির্যাতন করা হয়েছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই মুক্তিযোদ্ধা। তাকে উঠিয়ে নেয়ার আগে তার ছেলে হারুন অর রশিদকে সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
রোববাব সকালে ছাড়া পেয়ে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী।
হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত রফিকুল ইসলাম অভিযোগ পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নির্যাতনের শিকার আকবর আলী উপজেলার উত্তর জাওরানী গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়া তিনি ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের বাড়িও একই গ্রামে।
জানা গেছে, ছেলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে ৮১ বছর বয়সী আকবর আলী ধনীকে নিজ বাড়ি থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও চৌকিদার তুলে নিয়ে যান। পরে চেয়ারম্যান ও চৌকিদার তাকে চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন।
গরু চুরির অপবাদে ৮১ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী জানান, ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা গরু চুরির অভিযোগ তুলে চেয়ারম্যান ও চৌকিদার তাকে বাড়ি থেকে তুলে নেন। এরপর তাকে বেঁধে রাখেন।
বলেন, ‘আমি অসুস্থ অ্যাজমা রোগী, তার পরও আমাকে বেঁধে রাখেন তারা। দেশ স্বাধীন করে আজ এই প্রতিদান পেলাম আমি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এর সঠিক বিচার চাই।’
স্থানীয়রা বলেন, ছেলে অপরাধ করলে তার শাস্তি হবে। ছেলের অপরাধ কেন তার বাবা, তাও আবার বয়স্ক ও অসুস্থ তাকে বেঁধে রাখা হলো? এক জন জনপ্রতিনিধি হয়ে চেয়ারম্যান কীভাবে এমন কাজ করতে পারলেন। তারা এর বিচার চান।
বিষয়টি নিয়ে ভেলাগুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাকে বেঁধে রাখা কিংবা কোনো প্রকার মারধর করা হয়নি। তার ছেলে গরু চুরির সঙ্গে জড়িত। তাই তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে আমার বৈঠকখানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল।’
হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে ওসি তদন্তকে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
লিখিত অভিযোগটি পরে মামলা আকারে নেয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
এর আগেও চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন ও তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে লর নুরুজ্জামান নামের এক যুবককে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ ছিল। পরে ওই ঘটনায় ইউপির তিন গ্রামপুলিশ সদস্য মাদকসহ পুলিশের কাছে আটক হয়েছিলেন।