বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘জরিনার’ ঘরে দুই বাচ্চা

  •    
  • ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৮:২৩

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের স্ত্রী ভালুক জরিনা। চার পুরুষ ভালুকের সঙ্গী হিসেবে রাখা হয় স্ত্রী ভালুক জরিনা ও কারিনাকে। সম্প্রতি দুটি বাচ্চা প্রসব করেছে জরিনা। যা সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ এশিয়াটিক কালো ভালুক প্রজননে বড় ধরনের সফলতা হিসেবে দেখছে।

আবদ্ধ অবস্থায় সচরাচর বাচ্চা প্রসব করতে পারে না এশিয়াটিক ব্ল্যাক বিয়ার তথা কালো ভালুক। তবে আবদ্ধ অবস্থার মধ্যেও আবাসস্থল যদি মাটির সংস্পর্শে থাকে তাহলে সেখানে গর্ত করে বাচ্চা প্রসব করতে পারে স্ত্রী ভালুক।

আর সেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের স্ত্রী ভালুক জরিনা। চার পুরুষ ভালুকের সঙ্গী হিসেবে রাখা হয় স্ত্রী ভালুক জরিনা ও কারিনাকে।

সম্প্রতি দুটি বাচ্চা প্রসব করেছে জরিনা। যা সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ এশিয়াটিক কালো ভালুক প্রজননে বড় ধরনের সফলতা হিসেবে দেখছে।

কারণ, এই প্রজাতির ভালুক এশিয়ার মধ্যে বিলুপ্তি ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে। জরিনার ঘরে আসা নতুন দুই অতিথি বাচ্চার চোখ ফুটলেও এখনো লিঙ্গ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। লিঙ্গ শনাক্তের জন্য অন্তত দুইমাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে পার্কের আরেক বেষ্টনীর পুরুষ ভালুক জ্যাকবনের দুই স্ত্রী মৌসুমি ও পূর্ণিমার সংসারে তিনটি ভালুক বাচ্চা জন্ম নেয়। যা সাফারি পার্ক তথা দেশি-বিদেশি পর্যটক-দর্শনার্থীদের জন্য সুখবর ও বিরল ঘটনা ছিল।

এবার জরিনার ঘরে জন্ম নেয়া দুই বাচ্চাকে ঘিরে তাদের লালন-পালনে পার্ক কর্তৃপক্ষের বেশ তোড়জোড় চলছে। আলাদা করে রাখা হয়েছে বাচ্চাসহ মা জরিনাকে।

এ সময় মানুষের গন্ধ পেয়ে দুই বাচ্চাকে গর্তের ভেতর রেখে একবার বেরুচ্ছে আবার ঢুকে পড়ছে জরিনা। তবে কৌশলে ছবি সংগ্রহ করা হয় ভালুকের দুই বাচ্চার।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা ড. তপন কুমার দে নিউজবাংলাকে জানান, এশিয়াটিক ব্ল্যাক বিয়ার তথা কালো ভালুক বর্তমানে বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। এরা নিশাচর ও একাকী জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। মূলত জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ই এদের অন্যতম আবাসস্থল।

চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি বনাঞ্চলে মাঝে-মধ্যে এদের দেখা মেলে। এরা দেখতে কুচকুচে কালো বর্ণের এবং দেহের বুকের অংশে ভি আকৃতির দাগ রয়েছে। উচ্চতায় চার থেকে ছয় দশমিক পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। আর ওজনে ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২৮০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। খাদ্যাভ্যাসে এই প্রজাতির ভালুক সর্বভূক।

বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পার্কের বেষ্টনীতে প্রসবকৃত দুই বাচ্চাকে নিয়ে মা জরিনা বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। প্রায় ১৫ দিন আগে জন্ম নেয়া বাচ্চা দুটিও বেশ সুস্থ রয়েছে।

পার্কের সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আবদ্ধ অবস্থায় থাকায় ঢাকা চিড়িয়াখানায় ভালুকের প্রজনন হয় না। সেখানে এ সাফারি পার্কের ভালুক বেষ্টনীর কাছে মাটির সংস্পর্শে থাকায় এ নিয়ে পর পর তিনবার প্রজননে সফলতা এসেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটি প্রাপ্তবয়স্ক ভালুক প্রতিদিন আড়াই কেজি করে খাবার খায়। তার মধ্যে মধু, পাউরুটি, শসা, ডিম, কলা, মিষ্টি লাউ, গাজর অন্যতম।’

চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন কর্মকর্তা এবং বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের প্রকল্প পরিচালক আবু নাছের ইয়াছিন নেওয়াজ বলেন, ‘দিন দিন এই পার্কটি বন্যপ্রাণি সমৃদ্ধ পার্কে পরিণত হতে চলেছে। শুধু তাই নয় আগেও এই পার্কটি সিংহ, বাঘ, জলহস্তি, হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণির যথেষ্ট প্রজনন হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পার্কে ভালুক আবদ্ধ অবস্থায় থাকলেও যখন সন্তান প্রসব করার সময় আসে তখন নিজেরাই খাঁচার কাছে বেষ্টনীর ভেতর মাটির নিচে এক ধরনের ডেন তথা গর্ত করে লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যায়। আর সেখানেই বাচ্চা প্রসব করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখে বাচ্চাদের ওপর।’

এ বিভাগের আরো খবর