থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছয় বছরের রুমি আক্তারকে প্রতি মাসে এক ব্যাগ রক্ত নিতে হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন ১৮ বছর পর্যন্ত প্রতি মাসে রক্ত নিলে সে সুস্থ হতে পারে।
রক্ত নিতেই মা রোকসানা বেগম ও আত্মীয় সেলিমের সঙ্গে শেরপুর সদর হাসপাতালে যাচ্ছিল। কিন্তু ৩১ জানুয়ারি শেরপুর-ঝিনাইগাতী সড়কের বাজিতখিলা ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায় ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষ হয়। এতে রুমির সঙ্গে অটোরিকশায় থাকা ছয়জনই প্রাণ হারান।
- আরও পড়ুন: রইল শুধু ৬ বছরের রুমি
পা ও দাঁত ভেঙে যাওয়ায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে শেরপুর সদর হাসপাতালে।
রুমির বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার পাঁচগাও তিনঘরিয়াতে। মা রোকসানা গৃহিণী, বাবা রফিকুল ইসলাম খামারের কর্মচারী। রুমির বড় বোন রুপা আক্তার পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে।
রুপার প্রশ্ন, ‘আমাদের দুই বোনকে এখন কে দেখবে? রুমি আর আমি এখন এতিম হয়ে গেলাম।’
শেরপুর সদরের মির্জাপুরে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে অটোরিকশার ছয় যাত্রী নিহত হন। ছবি: নিউজবাংলাবাবা রফিকুলও বুঝতে পারছেন না, কীভাবে তিনি মেয়েদের দেখাশোনা করবেন।
রফিকুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার এহন কী অইব? আমি তো বাইরে কামে থাহি। আমি কাম করমু না ওগরে দেহমু? আমার মেয়েডারে দেখব কেডা? আমার চিকিৎসা করার ক্ষমতাও নাই।’
রুমির বাবা রফিকুল ইসলাম ও বোন রুপা আক্তার। ছবি: নিউজবাংলাদুর্ঘটনায় নিহত সেলিম রুমির জন্য রক্ত সংগ্রহ করতেন। তিনি না থাকায় রক্ত কীভাবে জোগাড় হবে এবং মেয়েকে কীভাবে বাঁচাবেন জানেন না রফিকুল।
রুমির দাদি রেহানা বেগম বলেন, ‘মাও নাই যার বাউ নাই তার। এহন রুমির কী অইব? ওরে কেডা অক্ত ভরতে নিয়া যাইব?’
শেরপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক খায়রুল কবির সুমন জানান, মেয়েটিকে বাঁচাতে প্রতি মাসেই রক্ত দিতে হবে। তার পা ও দাঁত ভেঙে যাওয়ায় এখন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মেয়েটির চাচা সফিকুল ইমলামের দাবি, সরকার যেন রুমির চিকিৎসার ভার নেয়।