বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলই যাতায়াতে ভরসা

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৮:৩৬

চলাচলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি এখন আর পোহাতে হচ্ছে না লক্ষ্মীপুরের চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের। তাদের কষ্ট লাঘব করেছে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক বেকার তরুণ ও যুবকের।

লক্ষ্মীপুরের চরাঞ্চলে অধিকাংশ রাস্তাই মাটির। পাকা সড়কগুলোও বেহাল। ভাঙা ও উঁচুনিচু। এ কারণে গণপরিবহন দূরে থাক, রিকশাও খুব একটা চলে না। এসব অঞ্চলের বাসিন্দাদের তাই কোথাও যেতে ভরসা ছিল দুই পা।

সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হতো রোগী নিয়ে। হেঁটেই যেতে হতো হাসপাতালে। যানবাহন পেলেও তাতে অনেক দেরি হতো।

দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তি অবশ্য এখন আর পোহাতে হচ্ছে না চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের। তাদের এ কষ্ট লাঘব করেছে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক বেকার তরুণ ও যুবকের।

এক সময় কর্মসংস্থানের অভাবে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন এ এলাকার অনেক যুবক। ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে তারাই এখন স্বাবলম্বী।

ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানো এমনই এক জন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মধ্য চর রমনি মোহন এলাকার সেলিম উদ্দিন।

তিনি নিউজবাংলাকে জানান, মোটরসাইকেলের আয় দিয়ে স্বাচ্ছন্দে চলছে তার সংসার। দৈনিক খরচের পাশাপাশি সঞ্চয়ও করতে পারছেন। যদিও এক সময় তার দিন কাটত অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে।

এ পেশায় আসার কারণ সম্পর্কে জানান, কয়েক বছর আগে বরিশালে একটি ইটভাটায় কাজ করতেন। একদিন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একজন মোটরসাইকেল চালক তাকে ভাড়ায় গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়ার কথা বলেন। তবে তখন তিনি বিষয়টি জানতেন না। তাই ওই চালককে যাবেন না বলে দেন। কিন্তু পরে মোটরসাইকেল চালিয়ে টাকা কামাই করার বিষয়টি তার মাথায় ঢোকে।

সেলিম আরও জানান, বরিশাল থেকে ফেরার পর তিনি রিকশা চালানো শুরু করেন। পরে এলাকার বাজারে মানিক মিয়া নামের বিদেশফেরত একজনকে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতে দেখেন। তার সঙ্গে কথা বলে একটি মোটরসাইকেল কেনেন। এরপর ৭ বছর ধরে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন তিনি।

ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন সেলিমের মতো এই এলাকার অনেক যুবক। কেউ নগদ টাকায়, আবার কেউ কিস্তিতে কিনেছেন মোটরসাইকেল। বিকল্প এই কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অনেকেই এখন স্বাবলম্বী।

জেলা সদরের মজুচৌধুরীর হাট, কমলনগরের মতিরহাট, রামগতির আলেকজান্ডারসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় যাত্রীবাহী এসব মোটরসাইকেল দেখা যায়।

মো. মিলন নামের মজু চৌধুরীর হাট এলাকার এক চালক বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যাত্রী আনা-নেয়া করে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করেন। এই আয় দিয়ে সংসার চালানো ও সন্তানদের পড়ালেখার খরচ দেয়ার পরও কিছু সঞ্চয় করেন।

চর রমনি মোহন এলাকার বাসিন্দা নজরুল জানান, এখানকার বেশির ভাগ রাস্তা সরু ও মাটির। পাকা রাস্তাগুলোও গর্তে ভরা। ফলে যাত্রীবাহী গাড়ি চলে না। মাঝেমধ্যে চললেও, গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগে বেশি। ভাড়াও গুনতে হয় দ্বিগুণ।

তিনি আরও জানান, এখন ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল পাওয়া যায় রাতদিন যেকোনো সময়। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছানো যায়। ভাড়াও লাগে কম।

তবে ভাড়ায় চলা এসব গাড়ির বেশির ভাগেরই নেই রেজিস্ট্রেশন। চালকদেরও নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স, মাথায়ও থাকে না হেলমেট। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

স্থানীয়দের দাবি, এসব চালকদের সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। এতে যাত্রীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবেন।

রিপন নামের এক চালক জানান, অধিকাংশ চালক ধারদেনা বা কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনেন। এ কারণে অনেক চালকের পক্ষে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হয় না। এ জন্য প্রায়ই তাদের জরিমানা গুনতে হয়।

তিনি অভিযোগ করেন, কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ট্রাফিক পুলিশ অনেক সময় তাদের হয়রানি করে। টাকা দাবি করে। সেই টাকা না দিলে গাড়ি জব্দ করে নিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের যথাযথ সহযোগিতা পেলে এই পেশার মাধ্যমে অনেকের বেকারত্ব দূর হবে বলেও আশা করেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর