দিনাজপুরে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে বিপন্ন হয়ে পড়েছে জনজীবন।
জেলায় শৈত্যপ্রবাহে বেড়েছে শিশুরোগ। আর ঘন কুয়াশায় উদ্বেগে পড়েছেন আলুচাষিরা।
মাঘের শুরুতেই এমন আবহাওয়ার সঙ্গে দিনাজপুরবাসী পরিচিত। ঘন কুয়াশা আর শীতের প্রকোপ বাড়ায় সন্ধ্যা নামতেই শহর হয়ে পড়ে স্থবির। দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।
দিনাজপুর শহরের অরবিন্দ শিশু হাসপাতাল ও দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারির ২৫ দিনে দিনাজপুর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ৩৩১ শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। অরবিন্দ শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ১৬৫ শিশু। এ ছাড়াও এই দুই হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ শিশু চিকিৎসা নেয়।
দিনাজপুরের শহরের ইজিবাইকচালক রবি ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, ঘন কুয়াশার ফলে তাদের গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়। অপরদিকে ঠান্ডার কারণে যাত্রী কম। এ কারণে অনেক সমস্যা পড়তে হচ্ছে তাদের।
সদর উপজেলার গোপালগঞ্জ বাজারের শ্রমিক মাহাবুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, ঠান্ডার কারণে শরীরে চলে না। ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। কাজ না করলে সংসার চালাবেন কী করে। তাই ঠান্ডার মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে।
মৌসুমি শীতের কাপড় বিক্রেতা রহিমুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, গত কয়েক দিনে ঠান্ডা বাড়ায় গরম কাপড়ের বিক্রি বেড়েছে। এখন গরম কাপড় ভালো বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি খুব খারাপ ছিল।
সদর উপজেলার ব্যাংককালী গ্রামের আলুচাষি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘কুয়াশা হলে ক্ষেতে আলু গাছের ক্ষতি হয়। তারপরও আমরা ঘুন কুয়াশার মদ্দে কীটনাশক ছিটেয় আলুর গাছ রক্ষের চেষ্টা করছি। এভাবে ঘুন কুয়াশা হতে থাকলে আমাদের আলুর অনেক ক্ষতি হবে।’
একই গ্রামের আলুচাষি সিরাজ উদ্দীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত বছর ঘুন কুয়াশার কারণে আমার আলুর অনেক ক্ষতি হয়েছিল। এ বছরও এই চলতে থাকলে আমার এবারও অনেক ক্ষতি হবে। তারপরও আলুর গাছ বাঁচানোর জন্য কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক দিছি।’
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বর্তমানে দিনাজপুরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে, যা আগামী কয়েক দিন থাকতে পারে।’
অরবিন্দ শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনীন্দ্র নাথ রায় নিউজবাংলাকে জানান, হাসপাতাল বর্তমানে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুরা বেশি ভর্তি হচ্ছে। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। এ ছাড়াও নবজাতকদের ঠান্ডাজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।