রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ দেয়ার অভিযোগের মামলায় সুনামগঞ্জ পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সাবেক প্যানেল মেয়র হোসেন আহমদ রাসেলকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
সোমাবার আদালতে হাজির হয়ে রাসেল জামিন চাইলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক কুদরত-ই-এলাহি তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত বুধবার সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে একই মামলায় সুনামগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র নাদের বখত, সাবেক প্যানেল মেয়র হোসেন আহমেদ রাসেলসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি করে। তবে পরদিন বৃহস্পতিবার মেয়র নাদের বখতসহ দুই জন একই আদালত থেকে জামিন নেন।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলা পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে আসেন দুই রোহিঙ্গা নাগরিক। তারা দুজনই সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার চার ব্যক্তির সহায়তায় সুনামগঞ্জে আসেন। ঘটনার দিন সকালে পাসপোর্ট করতে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আসলেও বিকেলে ছবি তোলা ও আঙ্গুলের ছাপ দিতে পাসপোর্ট কার্যালয়ে গেলে তাদের কথাবার্তায় কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে দুই রোহিঙ্গা ও তাদের সহযোগী চার ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দেন তারা।
ওই দিনই প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে জামালগঞ্জ উপজেলার তেরানগর গ্রামের ফরহাদ আহমদ, রামনগর গ্রামের নূর হোসেন, সুজাতপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন ও আমির উদ্দিনকে আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক জিন্নাতুল ইসলাম তালুকদার।
পরে রোহিঙ্গা ও চার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে তারা সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সাবেক প্যানেল মেয়র হোসেন আহমদ রাসেলের সুপারিশে পৌরসভা থেকে জন্ম সনদ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ২১ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ সময় এজাহারভুক্ত চার আসামি ছাড়া তদন্তে আরও পাঁচ ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুনাগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক একেএম জালাল উদ্দিন জানান, তদন্তে আরও পাঁচ জন জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়রও রয়েছেন। জন্ম সনদে পৌরসভার মেয়র নাদের বখত ও ওই সময়ের প্যানেল মেয়র হোসেন আহমেদ রাসেলের স্বাক্ষর পান। এ ছাড়া আরও তিন জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সুনামগঞ্জ পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক সেলিম নেওয়াজ জানান, জামিন চাইলে আদালত জামিন না দিয়ে হোসেন আহমদ রাসেলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।