হত্যা মামলার আসামি হিসেবে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক মো. সাজিদুল ইসলাম সাজিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে রিমান্ড শুনানির দিন পরে দেয়া হবে জানিয়ে সাজিদুলকে জেল হাজতে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
এর আগে গত রোববার রাত সাতটার দিকে শহরের ঝিলটুলী এলাকা থেকে ২৪ বছর বয়সী সাজিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, সাজেদুল ছোটন বিশ্বাস হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
২০১৬ সালের ১৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি দল শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে অবস্থিত ঢাকা বাস কাউন্টারে হামলা চালায়। হামলাকারীরা গুলি করে ও কুপিয়ে ওই কাউন্টারের চার কর্মী অম্বিকাপুর ইউনিয়নের নম্বর ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. কামাল শেখ (২৭), ছোটন বিশ্বাস (৩২), লাবলু শেখ (২৫) ও নয়ন শেখকে (২০) আহত করে।
আহত ছোটনকে পরেরদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুলাই মারা যান ছোটন।
ছোটন বিশ্বাস যুবলীগের কর্মী ছিলেন। তিনি ফরিদপুর সদরের রঘুনন্দনপুর খ্রীষ্টান মিশন মহল্লার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় ওই কাউন্টারের মালিক অম্বিকাপুর ইউনিয়নের উত্তর শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় আট জনের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচ-ছয় জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
রোববার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভা ছিল। সেখান থেকেই সাজিদুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাজিদুলকে গ্রেপ্তারের খবর শুনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের পুলিশকে বাধা দেয়। সাজিদুলকে পুলিশের গাড়িতে উঠানো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে টানা হেঁচড়া হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ সাজিদুলকে ছেড়ে দেয়।
পুলিশ সাজিদুলকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য নেতাদের বলে। রাত আটটার দিকে সাজিদুলের বাবা জাকারিয়া খান এসে তার ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘সাজিদুল ছোটন হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তিনি ভাড়া বাড়িতে থাকায় ও এজাহারে তার বাবার নাম না থাকায় এতদিন তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।’
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক ও রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক নাভিদ আল হাসান বলেন, ‘সাজিদের নামে মামলা আছে তা আমরা জানতাম না।’