পাঁচ বছরের ইভা আক্তার নাটাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। সকালে মাদ্রাসায় আরবি পড়তে যাওয়ার সময় তার ওপর অতর্কিত হামলা হয়। বাম হাত ভেঙে যায় ইভার।
ছোট্ট ইভা কিছুই বুঝতে পারেনি কেন তার উপর হামলা হলো। এরপর থেকে সে ভয়ে থাকে ও সবার সাথে কম কথা বলে। ইভার মতো অবস্থা গ্রামের অন্য বাসিন্দাদেরও। এই ভয় একটি মাটির রাস্তায় চলাচল নিয়ে।
চলাচলের জন্য দেড় বছর আগে মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের নাটাই ইউনিয়নের নরসিংসার গ্রামের উত্তর পাড়ার বাসিন্দারা। অভিযোগ উঠেছে, শাহজাহান মিয়া নামে একটি ব্যক্তি রাস্তাটি দিয়ে চলাচলে বাধা দিচ্ছেন তাদের। কেউ যাতায়াতের চেষ্টা করলেই করা হচ্ছে হামলা। স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তার পাশে নিজের কিছুটা জায়গা থাকায় গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচল করতে নিষেধ করে দিয়েছেন শাহজাহান।
অবশেষে এর সুরাহা চেয়ে রোববার সকালে মানববন্ধন করেছে ৩০টি অবরুদ্ধ পরিবার।
হামলায় আহত শিশু ইভা আক্তার
মানববন্ধনে হাজী আব্দুর রহমান বলেন, ‘দৈনন্দিন কাজে চলাচলের জন্য এই রাস্তা আমাদের একমাত্র মাধ্যম। শাহজাহানের কারণে এখন চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই আমরা মানববন্ধন করতে বাধ্য হয়েছি।’
দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
উত্তর পাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সামা বলেন, ‘বছর খানেক আগে রাস্তা তৈরির সম্মতি দেন শাহজাহান। পরে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি বানানো হয়। সম্প্রতি শাহজাহান তার বাড়ির সামনের রাস্তার অংশের মাটি কেটে দেন এবং চলাচল করতে নিষেধ করেন।
তিনি বলেন, ‘৬ ডিসেম্বর জীবন মিয়ার মেয়ে ইভা সকালে মসজিদে আরবি পড়তে যাওয়ার সময় শাহজাহান তার ওপর হামলা করে হাত ভেঙে ফেলে। এ ঘটনায় মামলা করেছেন ইভার বাবা।’
নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হক বলেন, ‘আমি নিজে ওনাকে অনুরোধ করেছি রাস্তাটির জন্য। তবে তিনি অন্য কারো কাছে শুনেছেন এ রাস্তা নাকি পরে বড় হবে। তাই তিনি কিছুতেই তার বাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা চান না।’
তিনি বলেন, ‘এই রাস্তাকে ঘিরে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সবাই অল্প করে জায়গা দিয়েই রাস্তাটি তৈরি করেছে। এখন তিনি একা রাস্তা নিয়ে বিরোধিতা করছেন। তবে আমি এখনও রাজি এই রাস্তা নিয়ে মীমাংসা করে দিতে। শিশু ইভার ওপর হামলার ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম জানান, মামলাটি মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হয়েছে। বর্তমানে এটি তদন্তাধীন। এখনও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
অভিযোগের ব্যাপারে শাহজাহান মিয়ার সঙ্গে বেশ কয়েক বার যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।