ছয় বছর আগে যশোরের এক ম্যাজিস্ট্রেট স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নির্যাতনের দুটি মামলা করেছিলেন নাজিয়া ইসলাম। চলমান সেই মামলায় বিভাগীয় তদন্তের পর ম্যাজিস্ট্রেট একেএম তারিকুজ্জামানকে তিরস্কারের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ওএসডি করে রেখেছিল প্রশাসন।
ছয়মাস আগে পারিবারিকভাবে মীমাংসা হলে স্বামী-স্ত্রী আবারও একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু এরই মধ্যে ওই ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে স্ত্রী নাজিয়া ইসলাম আবারও মারধরের অভিযোগ করেছেন।
২১ জানুয়ারি তারিকুজ্জামান যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কুয়াদায় তার স্ত্রী নাজিয়া ইসলামকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন।
নাজিয়া আহত অবস্থায় রোববার সকাল ১০টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত আছেন তারিকুজ্জামান। তিনি ৩৪ বিসিএসের কর্মকর্তা।
নাজিয়া ইসলাম বলেন, ‘২১ জানুয়ারি স্বামীর গ্রামের বাসা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কুয়াদায় থাকা অবস্থায় আমাকে মারধর করা হয়। মোবাইলে অন্য নারীর সঙ্গে আমার স্বামী কথা বলছিলেন, কার সঙ্গে কথা বলছিল সেটা জিজ্ঞেস করাতে আমাকে কাঠ দিয়ে মেরে আহত করে।’
স্ত্রীর অভিযোগ, তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে গৃহবন্দী করে রেখেছিল তারিকুজ্জামান। পরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে তার এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে রাখেন স্ত্রীকে। রোববার সকালে নাজিয়ার বাবা খোঁজ পেয়ে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
নাজিয়া ইসলাম আরও জানান, এর আগে স্বামীর বিরুদ্ধে তিনি যৌতুক ও নির্যাতনের দুটি মামলা করেছেন। সেগুলো চলমান আছে। ৬ বছর আগে তার স্বামীর বিরুদ্ধে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় অভিযোগ করেন মাদক গ্রহণ ও অসাদাচরণের। এর জন্যে তাকে তিরস্কারও করে, দীর্ঘদিন ওএসডি ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘ছয় মাস আগে পারিবারিকভাবে মীমাংসার পর একসঙ্গে থাকা শুরু করার সময় তার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করলে কাজে যোগদানের সুযোগ পায়। কাজে যোগ দিয়ে আবার মারধর শুরু করে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার কিছুটা সত্যতা আছে, বাকিটা অতিরঞ্জিত। আমার মা-বাবার সঙ্গে বেয়াদবি করলে তাকে হালকা মেরেছিলাম।’
তার বিরুদ্ধে মামলা, মাদক গ্রহণের অভিযোগ, ওএসডি ও বিভাগীয় তিরস্কারের কথা স্বীকার করেন তিনি।
তার সম্মানের দিকে তাকিয়ে এ বিষয়ে সংবাদ না করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আফজাল হোসেন বলেন, ‘নাজিয়া ইসলামের কয়েকটি পরীক্ষা করতে দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।’