বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিজের স্থায়ী ঠিকানায় কুড়িগ্রামের ১৫৪৯ পরিবার

  •    
  • ২২ জানুয়ারি, ২০২১ ২২:০২

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ২০০টি, ভূরুঙ্গামারীতে ২০০টি, নাগেশ্বরীতে ২৬৪টি, ফুলবাড়িতে ১৬৫টি, রাজারহাটে ৭০টি, উলিপুরে ২০০টি, রৌমারীতে ৫০টি, চিলমারীতে ১০০টি, রাজিবপুর ৩০০টি ঘরের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণে খরচ হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। এ হিসাবে জেলায় ঘর নির্মাণে ব্যয় হয় ২৬ কোটি ৪৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের আরাজী পলাশবাড়ী এলাকায় বসবাস করেন ৪০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী মোখলেছুর রহমান। নিজের কোনো জমি নেই, জীবন নির্বাহে ভাড়ায় রিকশা চালান তিনি। দুই বছর থেকে হৃদরোগে ভুগছেন তিনি।

স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার তার। খাস জমিতে একটা টিনের চালার মধ্যে কষ্টে কাটান জীবন। শৌচাগার না থাকায় প্রাকৃতিক কাজ সারতে হয় প্রকৃতিতেই। ভাঙা বেড়া-ভাঙা ঘর। এমন কষ্টের মধ্যে আর্শিবাদ হয়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার। নিজের ঘর ও জমি না থাকার দুঃখ ঘুঁচতে যাচ্ছে মোখলেছুরের।

আরাজী পলাশবাড়ী এলাকায় প্রয়াত বীরপ্রতীক তারামন বিবির বাড়ি সংলগ্ন দুই শতক জমিতে দুটি কক্ষ, টয়লেট, বারান্দা ও রান্না ঘরসহ একটি বাড়ি বরাদ্দ পেয়েছেন মোখলেছুর। শনিবার প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেই বাড়িতে তারা বসবাস শুরু করবেন।

মোখলেছুর ঘর পাওয়ার কথা বলতে গিয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর এমন উপহারের কোন তুলনা করতে চাননা তিনি। তাদের খুশির শেষ নেই। আগামী দিনগুলো নিরাপদে ও শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। ঘরের দুই শতক জমি তাদের নামে লিখে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

একই এলাকায় ঘর পেয়েছেন রমিছা। স্বামী আব্দুর রশিদ ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা চালায়। বাড়িঘর নেই। অন্যের জায়গায় একটা চালা ঘরে আশ্রিত। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তাদের সংসার। জমিসহ ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা রমিছার পরিবার। বাড়িতে ওঠার অনুমতি না পেলেও বারবার আসে, তালাবদ্ধ ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এখন প্রতীক্ষা কখন উঠতে পারবেন সেই ঘরে।

রমিছা আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, এখন স্থায়ী ঠিকানা হলো। খুব ভালো নাগছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সত্যিকারের মা। সে জন্যই আমরা পেলাম স্বপ্নের উপহার।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলায় নয়টি উপজেলায় এক হাজার ৫৪৯টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া জমির কাগজপত্র গৃহহীনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।

এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২০০টি, ভূরুঙ্গামারীতে ২০০টি, নাগেশ্বরীতে ২৬৪টি, ফুলবাড়িতে ১৬৫টি, রাজারহাটে ৭০টি, উলিপুরে ২০০টি, রৌমারীতে ৫০টি, চিলমারীতে ১০০টি, রাজিবপুর ৩০০টি ঘরের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণে খরচ হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। এ হিসাবে জেলায় ঘর নির্মাণে ব্যয় হয় ২৬ কোটি ৪৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা।

গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম তার কার্যালয়ে ঘরগুলো সুবিধাবঞ্চিতদের কাছে হস্তান্তর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

সেখানে ঘরগুলোর স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুবিধাভোগীদের শঙ্কার কথা তুলে ধরেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তারা জেরা প্রশাসককে জানান, ভাঙনকবলিত এলাকায় অন্য সমতলের মতো করে নকশায় বাড়ি নির্মাণ ও নির্মাণে তড়িঘড়ির কারণে বাড়িগুলোর স্থায়িত্ব খুব বেশি না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সে সময় জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা ঘরগুলো নির্মাণে প্রত্যন্ত চরাঞ্চল বেছে নিইনি। আমরা এমন জায়গা বেছে নিয়েছি যেখানে এগুলো স্থায়ী হয়। ফলে এমন আশঙ্কা নেই।’

কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদী। সাড়ে চারশ চরাঞ্চল। নদী ভাঙনপ্রবণ ইউনিয়ন ৫৫টি ইউনিয়ন রয়েছে।

ভূরুঙ্গামারী বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান স্বপ্ন বলেন, দ্রুত সময়ে ঘর নির্মাণ করায় নিচু এলাকায় এসব মানুষ বন্যার সময় পানিবন্দি হয়ে পড়বেন। তাই ভবিষ্যতে বিষয়টি মাথায় নিয়ে ঘর নির্মাণ ও ভিটেমাটি উঁচু করার তাগিদ দেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর