নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে চলছে পারপার। স্বাধীনতার পর থেকে সেতুর দাবি নানাভাবে তুলছে এলাকাবাসী। কিন্তু দাবি পূরণ হয়নি।
আদৌ সেতু হবে কি না- এ নিয়ে আশা নিরাশার দোলাচলে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনপাল গ্রামের মানুষজন।
গ্রামের মোল্লা বাড়ি ও পশ্চিম পাড়ার সংযোগ সড়কে নলুয়া খালের শাখা খালের ওপর সেতুটি নির্মাণের দাবি উঠেছে।
গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন ওই স্থানের বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
নড়বড়ে সাঁকোর বিড়ম্বনায় মনপাল গ্রামের দিন মজুর গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘হুলের (পুলের) উপ্রে দিয়া হারুইতে যাইলেই নীচে হড়ি দুক্কু (ব্যাথা) পাই। মেঘের সিজনে (বর্ষাকালে) একবার হড়ি (পড়ে) গেছিলাম। ঠেংয়ে (পায়ে) দুক্কু পাইছি। অহনও ভালা অয়নি।’
কৃষক আলী আকবর বলেন, ‘কত মুইল (সাঁকো) হাক্কা হুল (পাকা সেতু) অইলো। আংগো একটা হাক্কা হুল করি দেয় না কেউ। আমডাও বুট (ভোট) দেই সরকারকে। সরকার আমডারে একখান হুল বানাই দিলে হারে (পারে)।’
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বছরের হইলা দিয়া আঁর ছোডু হুলাডা হাউক্কাতুন হড়ি গেছিল (বছরের প্রথম দিকে আমার ছোট ছেলেটা সাঁকো থেকে পড়ে গিয়েছিল)। হানিত ভাসি গেছিল। আল্লায় রাহি গেছে। আংগো একটা হুল ছাই। আর কিছু ছাওয়ার নাই।’
সাঁকো সংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা রবিউল হক জানান, দেশ স্বাধীনের আগে থেকে এখানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছর স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাঁকোটি সংস্কার করা হয়। সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে প্রায়ই শিশু ও বয়স্করা আহত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘এই ইউনিয়নে আর কোথাও বাঁশের সাঁকো নেই। এখানে নলুয়া খালের শাখার খালের ওপর একটি ব্রিজ নির্মিত হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে।’
স্থানীয় উত্তরদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, ‘মনপাল গ্রামের একাধিক সড়ক পাকা হয়েছে। আরো কিছু অংশের কাজ চলছে। বরাদ্দ পেলে বাকি সড়ক ও সেতুর কাজ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সাইফুল আলম বলেন, ‘এলাকাবাসী লিখিতভাবে বিষয়টি জানালে স্থানীয় প্রশাসন একটি সেতু নির্মাণ করে দেবে। আর যদি সেতুটি বড় হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই মন্ত্রী মহোদয়ের (স্থানীয় সরকার মন্ত্রী) নজরে আনব।’