ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার বাগাট ইউনিয়নের মিটাইন গ্রামে মধুমতী নদীতে ছয়টি ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু লুট করছেন স্থানীয় একটি ইটভাটার মালিক।
মিটাইন গ্রামে নদীর ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ওই ছয়টি ড্রেজার বসিয়েছেন ওই এলাকার এম এম কে বি ব্রিকসের মালিক মিটুল মোল্লা।
স্থানীয় বাসিন্দা আলফাজ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে দিনরাত বালু তুলছেন মিটুল মোল্লা। পাইপের মাধ্যমে সেই বালু সামাদ ফকিরের বাড়ির বিপরীতে এবং ঘাট সংলগ্ন এলাকায় স্তূপ করে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইটভাটার মালিক মিটুল মোল্লা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে কথা বলতে সাহস পান না।
শুক্রবার দুপুরে মিটাইন ঘাট সংলগ্ন এলাকায় দেখা গেছে, নদী থেকে তোলা বালু পাইপের মাধ্যমে ঘাট সংলগ্ন এলাকায় এবং কয়েক শ গজ দূরে সামাদ ফকিরের বাড়ির বিপরীত পাশে রাখা হচ্ছে। ২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। মাঝিবাড়ি-রায়জাদাপুর সড়কের ওপর বাঁধ দিয়ে পাইপ নেয়া হয়েছে। এতে সড়কের কিছু অংশ ধসে গেছে। বালু বহনের জন্য কয়েকটি ট্রলি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পরে সরেজমিনে ইটভাটা এলাকায় দেখা গেছে, চার পাশে কৃষিজমি ও বাড়িঘরের মাঝখানে ইটভাটা। কৃষিজমিতে রাখা হয়েছে ইট।
মিটাইন গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ হোসেন বলেন, ‘মিটুল মোল্লা গত বছরও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে নদী থেকে বালু তুলেছিলেন। এবারও বালু তুলছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিটুল মোল্লার ইটভাটা এম এম কে বি ব্রিকসেরও অনুমোদন এখনও পায়নি। সবকিছু ম্যানেজ করে অবৈধভাবে ইটভাটা চালাচ্ছেন, আবার অবৈধভাবে নদী থেকে বালু তুলছেন। এসব দেখার কেউ নেই। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
কয়েক বছর আগে ইটভাটা চালুর সময় থেকেই এলাকাবাসী বাধা দেয়। কিন্তু ওই সময় মিটুল মোল্লা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতা নেন। তিনি ইটভাটা নির্মাণ করেন। ইটভাটা চালুর পর ট্রলিতে মাটি আনা নেয়ার কারণে মাঝিবাড়ি-নওপাড়া সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদ বলেন, ‘কৃষিজমিতে ইটভাটা করা হয়েছে। এরপর ভাটার ধোঁয়া ও ধুলায় আমরা বাড়িঘরে বসবাস করতে পারছি না। আমরা কিছু বললে, মিটুল ও তার লোকজন আমাদের হুমকি ধামকি দেয়। এ কারণে চুপ থাকি।’
জানতে চাইলে মিটুল মোল্লা বলেন, ‘বাড়ি করার জন্য নদীতে ছয়টি ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছি। তবে কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি।’
ইটভাটার অনুমোদনের কাগজপত্র থাকার দাবি করলেও তিনি দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানিয়া তাবাচ্ছুম বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। খুব দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা মনোয়ার বলেন, ‘উপজেলাতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে নদীর বালু তোলার কোনো সুযোগ নেই। এখনই বন্ধ করার ব্যবস্থা নিচ্ছি।’