জমি নিয়ে বিরোধ দুই পক্ষে। এর মধ্যে হয় হামলা। আর ভুক্তভোগী পরিবারটি আদালতে গিয়ে পড়েছে আরেক বিপাকে। তাদেরকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার জলিলপুর গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেছে। একঘরে হওয়ায় পরিবারটি চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
উপজেলার জলিলপুর গ্রামের নুর-ই-আলম পেশায় আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত।
তিনি জানান, তার বাড়ির পাশে কেনা জমির মধ্যে এক শতক স্থানীয় মহিদুল ইসলাম, কিয়ামত আলী ও নাজিম উদ্দিন জোর করে দখলে নিতে চান। কিন্তু তিনি বিক্রি করতেও রাজি নন, আবার বিনিময় করতেও চাইছেন না। এ নিয়ে ওই তিন জনের সঙ্গে তার বিরোধ চলে আসছিল।
আইনজীবী নুর জানান, এ ঘটনার জেরে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিপক্ষ তার বাড়িতে হামলা চালায়। তাকে ও তার বোনকে বেধড়ক মারধর করে।
পরদিন মহিদুল ইসলাম, কিয়ামত আলী ও নাজিম উদ্দিনের নামে আদালতে মামলা করেন নুর। সাক্ষী করা হয় প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী সাবিনা খাতুনকে।
মামলার আসামি মহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মিথ্যা মামলার কারণে সমাজের লোকজন তাকে বয়কট করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু করার নেই। সমাজের মানুষ প্রতিবাদ করলে আমাদের কী করার আছে বলেন।’
আসামিরা স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে গেলে তারা মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে শুরু করেন। রাজি না হওয়ায় বাদী ও সাক্ষীকে একঘরে করা হয়।
নূর-ই-আলম বলেন, ‘গ্রামের মাতব্বররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমাদের দুটি পরিবারকে একঘরে করার নির্দেশ দিয়েছেন। তারা গোপনে আশপাশের মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আমাদের সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেন। এতে পরিবার নিয়ে চরম সমস্যায় আছি।’
মামলার সাক্ষী সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমরা স্বামী এক জন দিনমজুর। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। এক সপ্তাহ হলো কেউ কাজে নিচ্ছে না।
‘আমি বাড়িতে বাচ্চাদের পড়াই। কিন্তু এখন কোনো বাচ্চা আমার কাছে পড়তে আসছে না।’
গ্রামের মাতুব্বর মহাকুল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আপনার কাছে অভিযোগ করেছে তা সম্পর্কে আমি কিছু বলব না। ওরা যে খারাপ তা আপনি ওদের আত্মীয়দের কাছে শোনেন। মোবাইলে এত কথা বলা যাচ্ছে না, আপনি আসেন। আসে সব যাচাই করে যান।’