বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রচার সম্ভাব্য প্রার্থীদের, পেরেকে কষ্ট গাছের

  •    
  • ৭ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:৩৫

‘গাছ সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে। আর গাছে পেরেক মেরে মানুষ তার প্রতিদান দিচ্ছে।’

সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ শুরুর আগেই চারদিকে টাঙানো দলীয় ব্যানার-পোস্টার জানান দেয় নির্বাচন আসছে।

পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরেও দেখা গেছে এই চিত্র। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনের অপেক্ষায় থাকা পৌর এলাকাগুলো। ব্যতিক্রম নয় সাতক্ষীরাও।

তবে এই জেলায় বেশির ভাগ ব্যানার-পোস্টার টাঙানো হয়েছেন গাছে পেরেক মেরে! অথচ গাছে পেরেক মারার বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। তা অমান্য করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় পরিবেশবিদরা ক্ষুব্ধ।

সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া পৌরসভার নির্বাচনের প্রার্থী এখনও বাছাই হয়নি। এখনই শহর থেকে গ্রাম, সব জায়গাতেই গাছে গাছে দেখা গেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানার। সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে ডিজিটাল বিলবোর্ডও। সেটিও ঝুলছে গাছে।

পাশাপাশি আছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানেরও ফেস্টুন-বিলবোর্ড। গাছের গায়ে পেরেক ঠুকে ঝোলানো হয় এসব।

সাতক্ষীরায় গাছে লাগানো পোস্টার। ছবি: নিউজবাংলা

এতে গাছের কী ক্ষতি হচ্ছে তা জানালেন ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দুলাল চন্দ্র মণ্ডল। তিনি বলেন, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয় তা দিয়ে পানি ও বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এভাবে এক সময় গাছটি মরে যায়।

জেলার শ্যামনগর আতরজান মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও পরিবেশবিদ আশেক-ই-এলাহী। তিনি বলেন, এক একটি গাছে পেরেক মেরে ১৫ থেকে ২০টি বোর্ডও টাঙানো হয়েছে। নির্বিচারে পেরেক লাগানোর কারণে সড়কের অনেক গাছ মরে গেছে। পেরেক মারা বন্ধ না হলে আরও গাছ মরে যাওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

গাছে পেরেক ঠুকে সাইনবোর্ড না লাগানোর বিষয়ে ২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে একটি আইন পাস হয়। তবে এর বাস্তবিক প্রয়োগ এ পর্যন্ত দেখা যায়নি।

সাতক্ষীরা পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকার গাছেই ঝুলছে এমন পোস্টার। ছবি: নিউজবাংলা

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) ও জেলা নাগরিক নেতা ফাহিমুল হক কিসলু জানান, এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু তা অনেকেই জানে না।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আমানউল্যাহ হাদী বলেন, ‘প্রাণিকূলের বেঁচে থাকার জন্য প্রধান উপাদান গাছ। এই গাছের যে প্রাণ আছে, অনুভূতিশক্তি আছে, তা প্রমাণিত। তবে গাছের বাকশক্তি নেই। গাছ সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে আমাদের জীবন বাঁচিয়ে রাখছে। আর গাছে পেরেক মেরে মানুষ তার প্রতিদান দিচ্ছে।’

এই আইন সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নন জানিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমুল কবির বলেন, গাছ থেকে পোস্টার ও বিলবোর্ড সরিয়ে নিতে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে প্রার্থীদের অনুরোধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে এগুলো না সরালে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর