ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারের ওএমএসের কার্ড দেয়ার তালিকা তৈরিতে অনিয়মের জন্য বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলমকে সমাজসেবা সম্মাননা দেয়ায় সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে।
সম্মাননা দেয়ার এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন।
রোববার রাতে দেয়া ওই চিঠিতে জেলা প্রশাসক বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় ও কীভাবে তাকে (শাহ আলম) সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য মনোনয়ন ও সম্মাননা দেয়া হয়েছে, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দেয়ার অনুরোধ করা হলো।জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষ্যে গত শনিবার জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শাহ আলমকে সম্মাননা দেয় সমাজসেবা কার্যালয়।
ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক নিজেই শাহ আলমের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। সেই মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হলে শুরু হয় সমালোচনা।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়কে দেয়া জেলা প্রশাসকের চিঠি। ছবি: নিউজবাংলা
করোনা সংক্রমণ শুরুর পর দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি ও লকডাউন চলাকালে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি দরে ওএমএসের চাল দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। শাহ আলম ছিলেন পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ওএমএস ডিলার।
অভিযোগ ওঠে, সেই চাল দেয়ার জন্য তৈরি তালিকায় নিজের স্ত্রী, মেয়ে, ভাই-বোনসহ কয়েক জন আত্মীয়ের নাম তোলেন শাহ আলম।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ১৪ মে শাহ আলমের ডিলারশিপ বাতিল করে জেলা ওএমএস কমিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শাহ আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমার নামে থাকা ডিলারশিপ বাতিল হলে আমি উচ্চ আদালতের নির্দেশে ডিলারশিপ ফেরত পাই। রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে আগামী ১৬ এপ্রিল এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সম্মাননা পেতে সমাজসেবা কার্যালয়ে আমি কোনো ধরনা দিইনি। আমি ১৯৯৬ সাল থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এক জন সমাজকর্মী। সমাজসেবা কার্যালয়ই আমাকে এই সম্মাননার জন্য বাছাই করেছে।’
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস বলেন, ‘শাহ আলম প্রশিক্ষিত এক জন সমাজকর্মীর পাশাপাশি আমাদের শিশু পরিবার ব্যবস্থাপনা কমিটিরও সদস্য। তার ওএমএস ডিলারশিপ বাতিলের তথ্যটি আমাদের জানা ছিল না।’
জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁনও দাবি করেন, শাহ আলমের ওএমএস বিতর্কের ঘটনা তার জানা ছিল না। ফেসবুকে সমালোচনা হওয়ার পরই বিষয়টি তার নজরে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই জেলা সমাজসেবা কার্যালয়কে চিঠি দেন তিনি।