সীমানা নিয়ে জটিলতায় মামলার কারণে ১০ বছর পর বাগেরহাটের মোংলা পোর্ট পৌরসভায় ভোট হচ্ছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করলেও ইভিএমে ভোট নিয়ে শঙ্কা আছেন বিএনপি প্রার্থী। এ জন্য মেয়র পদে বিএনপির ডামি প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছে।
এরই মধ্যে ভোট চেয়ে মাইকিং, গণসংযোগ ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে মোংলা পৌরসভার অলি-গলি।
প্রচার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। পিছিয়ে নেই কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তারা।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মেয়র প্রার্থী রয়েছেন তিন জন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোংলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, বিএনপির প্রার্থী ও মোংলা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান মেয়র মো. জুলফিকার আলী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মুকসুদুর রহমান গামা।
এ ছাড়া কাউন্সিলর পদে ৩৫ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১২ জন প্রার্থী রয়েছেন। ১৬ জানুয়ারি ভোট হবে। এবারই প্রথম এ পৌরসভায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
মোট ভোটার ৩১ হাজার ৫২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৬ হাজার ৬৮১ জন, আর নারী ১৪ হাজার ৮৪০ জন।
বিএনপির প্রার্থী জুলফিকার আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইভিএম পদ্ধতিতে যে ভোট কারচুপি হবে না, এটা বলা যায় না। দেশে ভোটগ্রহণের এটা নতুন পদ্ধতি। এ কারণে ইভিএম নিয়ে আমার মাঝে শঙ্কা কাজ করছে। এক ধরনের ধোঁয়াশার মধ্যে আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমার ভোটাররা যদি ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে, যেকোনো পদ্ধতিতেই নির্বাচন হক না কেন, আমি বিজয়ী হব। টানা ১০ বছর মেয়র হিসেবে পৌরসভার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছি। পৌর এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে ভালোবাসে। এখন শুধু অপেক্ষা তারা যেন নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরাসরি আমাকে হুমকি না দেয়া হলেও আমার দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমার কর্মীদের ওপর দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমার প্রাচার মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সব ঘটনায় জেলা রিটানিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও করেছি।’
নির্বাচনে ডামি প্রার্থীর কেন প্রয়োজন হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে এটা একটা কৌশলমাত্র। কোনো কারণে যদি আমি না থাকি সে ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে তিনি থাকবেন।’
এদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ আব্দুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে মোংলায় ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। আর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমি মোংলাবাসীর কাছে যাচ্ছি, তাদের কাছে ভোট চাচ্ছি। ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি।’
প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী যে অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। আমার কোনো কর্মী তার কোনো সমর্থকে হুমকি বা মারপিট করেনি। তিনি দীর্ঘ ১০ বছর মেয়র ছিলেন। মোংলা পৌরবাসীর উন্নয়নে কী করেছেন? পৌর এলাকার লোকজন তার ওপর ক্ষিপ্ত। তিনি শ্রমিকদের টাকা পর্যন্ত আত্মসাৎ করেছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। মেয়র নির্বাচিত হলে জনগণ যে দুর্দশায় আছে তা ঘোচাতে চেষ্টা করব। যেহেতু আমার সরকার ক্ষমতায় আছে, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব।’