বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যশোরে করোনা রোগীর সেবায় থাকা ৫৪ চিকিৎসক আক্রান্ত

  •    
  • ১ জানুয়ারি, ২০২১ ১৭:৪১

যশোর জেলায় করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত ৬৬ জন চিকিৎসক। ডাক্তার-নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে জেলাব্যাপী ‘ডেডিকেটেড টিম’ তৈরি করা হয়েছে। করোনা ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসক ছাড়াও ৭৬ জন নার্স ও এক জন স্বাস্থ্য সহকারী আক্রান্ত হয়েছেন।

যশোরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১২ এপ্রিল। এরপর ক্রমান্বয়ে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। এর সঙ্গে বেরিয়ে এসেছে জেলার স্বাস্থ্যব্যবস্থার রুগ্ন অবস্থা।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ব্যবস্থা না থাকায় করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও গুরুতর রোগীরা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত সেবা। পাশাপাশি অনেক চিকিৎসককে করোনা রোগীদের জন্য নিয়োজিত করায় অন্য রোগের চিকিৎসায়ও তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা।

জেলায় করোনা সংক্রমণ শুরুর পর যশোর জেনারেল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় করা হয় করোনা ইউনিট। জেলার ব্যস্ততম হাসপাতালে করোনা ইউনিট করায় সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় তৈরি হয় সংকট। আতঙ্কেও হাসপাতাল ছাড়েন অনেক রোগী।

জেলা সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, যশোর জেলায় করোনা মোকাবিলায় ৬৬ জন চিকিৎসক নিয়োজিত। এ ছাড়া ডাক্তার-নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে জেলাব্যাপী ‘ডেডিকেটেড টিম’ তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, জেলায় করোনা ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসা দিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৪ জন চিকিৎসক, ৭৬ নার্স ও এক জন স্বাস্থ্য সহকারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সিনিয়র রেডিওলজিস্ট সাজ্জাদ কামাল। এক নভেম্বর তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। শুরু থেকেই তিনি করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন।

তবে ভঙ্গুর স্বাস্থ্যব্যবস্থার কথা মানতে নারাজ জেলা সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন। বলেন, ‘বিশ্বব্যাপীই এটা স্বাস্থ্যসেবায় আঘাত করেছে। তারপরও যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে। অন্যান্য দেশের চেয়ে আমাদের স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা মোকাবেলায় সফল।’

শীতে সংকট বাড়ার শঙ্কা

ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ার পর জেলাজুড়ে বেড়েছে শীতকালীন রোগের প্রকোপ। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।

শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ শীতকালীন রোগে নভেম্বর মাসে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা ভর্তি হয় ১৫০ রোগী। ডিসেম্বরের ২২ দিনের মধ্যেই এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে।

এর মধ্যে শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন ৩০ জন। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকা এসব রোগীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।

যশোরে বাড়ছে শীতকালীন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা, হাসপাতালে মিলছে না বেড। ছবি: নিউজবাংলা

হাসপাতালের আইসিইউ চালু না হওয়ায় করোনা আক্রান্ত গুরুতর ১৩ রোগীকে ঢাকা ও খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এখন রোগীর সংখ্যা বাড়লে কী করা হবে তা স্পষ্ট করতে পারেননি কেউ।

র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট

তাৎক্ষণিক করোনা শনাক্ত করতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ পদ্ধতিতে ১৬৪ জনকে পরীক্ষায় ২০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

দ্রুত ফল পেয়ে সাধারণ নাগরিকেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অ্যান্টিজেন টেস্ট পরীক্ষা করা আব্দুস সামাদ নামের এক জন বলেন, দ্রুত ফল পাওয়ায় ভোগান্তি থেকে বেঁচেছি।

করোনা পরিস্থিতি

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ১২ এপ্রিল জেলার প্রথম করোনা রোগী ছিলেন মণিরামপুর উপজেলার এক জন স্বাস্থ্যকর্মী। এরপর ওই মাসে জেলায় শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫৫ জন। জুলাই থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ওই মাসের শেষে আক্রান্তে সংখ্যা দাঁড়ায় এক হাজার ৭৮৫ জনে।

শুধু আগস্টেই এক হাজার ৪৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ৭ সেপ্টেম্বর আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ও ১৪ অক্টোবার চার হাজার ছাড়ায়।

৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৬১৬ জন। সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৩১৮ জন। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ছয় জন, বাসায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২২৪ জন।

জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৫৫ জন।

এ বিভাগের আরো খবর