বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চারটি ব্রিজেরই কোনো সংযোগ সড়ক নেই

  •    
  • ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৩:১৩

ব্রিজটির একদিকে দায়সারাভাবে বালু দিয়ে ওঠানামার ব্যবস্থা করা হলেও অপরদিকে নেই কোনো ব্যবস্থা। অপর প্রান্তে ঝুঁকি নিয়ে শিট প্লেট দিয়ে নামতে বা উঠতে হয়।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইজলামারী গ্রামের জিঞ্জিরাম নদীর ওপর একটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় তিন বছর। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রত্যন্ত এই জনপদের মানুষ। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনেরও নেই কোনো ভ্রুক্ষেপ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ২০১৭ সালে প্রায় ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করে। ব্রিজটির একদিকে দায়সারাভাবে বালু দিয়ে ওঠানামার ব্যবস্থা করা হলেও অপরদিকে নেই কোনো ব্যবস্থা। অপর প্রান্তে ঝুঁকি নিয়ে শিট প্লেট দিয়ে নামতে বা উঠতে হয়।

ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। ব্রিজে ওঠানামা করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি অটোরিকশা,ভ্যান, মোটরসাইকেল কিংবা সাইকেল পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে এসব যানের চালক ও আরোহীরা। পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন অনেকে।

এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান বলেন, ‘হামাগো সরকার কুটি ট্যাহা দিয়া ব্রিজ দিলেও সেটা দিয়া পার হবার পাবাইছি না। ব্রিজের দোনো পাশে নাই কোন ঘাডা। জীবন হাতে নিয়ে পার হবার নাগে। বন্যার সময় তো আরো বেশি কষ্ট হয়। ব্রিজে উঠা-নামা করবার যায়া মেলা মাইনষের ঠ্যাং-হাত ভাংগিছে। পরি যায়া অনেকের রিকশা, অটোরিকশা ভাংছে এমন ঘটনা কবার গেলে পুতিদিন ঘটে।’

পার্শ্ববর্তী যাদুরচর ইউনিয়নেও একই দশা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েক বছর আগে এখানে দুটি ব্রিজ নির্মিত হয়। কিন্তু কোনো ব্রিজেরই সংযোগ সড়ক নেই।

এখানকার বাসিন্দা ছকমল আলী বলেন, ‘হামরা বাহে কৃষি কাজ করি সংসার চালাই। বাজারত ফসল বেচপার গেলে ৩/৪ কিলোমিটার ঘুরি যাওয়া নাগে। ৪/৫শ টাকা বেশি খরচ হয়। তোমরায় কন ক্যামতে হামার গরিব মাইনষের পোষায়। এই ব্রিজটার অবস্থা ভাল থাকিলে এত্যিকার মাইনষের টাকা বাঁচি গেইল।’

একই অবস্থা উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের বড়ুয়া শ্রীবল্লভ এলাকায় একটি ব্রিজের। ২০১৭ সালের বন্যায় দুই পাশের সড়কের মাটি সরে যাওয়ায় ওই ব্রিজে চলাচল করতে এলাকার বাসিন্দাদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ । পারাপারের জন্য ব্রিজের দুই পাশে বাঁশের সাকো দেয়া হয়েছে। তাই দিয়ে তারা ব্রিজে ওঠানামা করে।

উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের বড়ুয়া শ্রীবল্লভ এলাকার ব্রিজ। ছবি: নিউজবাংলা

স্থানীয় বাসিন্দা অটোরিকশা চালক মকবুল হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর থাকি ব্রিজটি এমন হালি পরি আছে। প্রশাসনের কেউ দেখবারও আসেনা। ব্রিজটি ভালো করিও দেয় না। অনেক কষ্ট করি ৭/৮কিলোমিটার ঘুরিয়া উপজেলা শহরে যাওয়া লাগে। আগে দিনে আয় হইতো প্রায় ৫/৬শ টাকা। এখন আয় কমি ১৫০ হতে ২০০ টাকা আয় হয়। এখন সংসারে খরচ চাল,ডাল, লবণ হিসেব করে খরচ করা নাগে।’

কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল আমিন বলেন, ‘উপজেলায় এমন অনেক ব্রিজ রয়েছে যেগুলোর সংযোগ সড়কের করুণ দশা। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে জানিয়েও কোনো প্রতিকার হয়নি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তা সঠিকভাবে তদারকি হচ্ছে না। এ কারণে সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল ইমরান মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন সময় বন্যার কারণে অনেক ব্রিজ/কালভার্টের সংযোগ সড়কের মাটি ধসে গেছে। কেননা এই অঞ্চলের মাটিতে বালুর পরিমাণ অনেক বেশি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সেগুলো ঠিক করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কঠোরভাবে বলা হয়েছে ।

এ বিভাগের আরো খবর