বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রোগী ভোগান্তির ধর্মঘট প্রত্যাহার

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৯:২৫

ধর্মঘটের কারণে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চার দিন, ময়মনসিংহে দুই দিন এবং নেত্রকোণায় বুধবার সকাল থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা বন্ধ ছিল।

জামালপুরে এক নারী রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তার স্বজনদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে চার দফা দাবিতে ডাকা ধর্মঘট চার দিন পর বুধবার প্রত্যাহার করেছেন চিকিৎসকরা।

তবে কর্মসূচি চলাকালে রোগীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

জামালপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে ময়মনসিংহে দুই দিন ও নেত্রকোনায় কয়েক ঘণ্টা কর্মসূচি পালনের পর তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের মিলনায়তনে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সদর আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন। সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মোশায়ের উল ইসলাম রতন, পৌর মেয়র মির্জা সাখওয়াতুল আলম মনিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই সভায় চার দফা দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়ায় তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন চিকিৎসকরা।

সভা শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক, স্বাচিপের আহ্বায়ক ও বিএমমের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আমাদের কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’

এ সময় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে আমরা আমাদের স্বাভাবিক কর্ম চালিয়ে যাব। বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ ছিল, সেই বহির্বিভাগ, অন্তবিভাগ ও জরুরি বিভাগের সেবা চালু থাকবে।’

২৫ ডিসেম্বর জামালপুর শহরের ইকবালপুর জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায়ের সময় নির্মাণাধীন দ্বিতীয়তলা ভবন থেকে পড়ে মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান বৃদ্ধা করিমন নেছা। পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় চিকিৎসা সেবায় অবহেলার অভিযোগ এনে কর্তব্যরত চিকিৎসক চিরঞ্জিতকে মারধর ও জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করেন রোগীর স্বজনরা।

এর জেরে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের ১০জন আহত হন।

পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ সময় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফর রহমানসহ সাত জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে সন্ধ্যায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার এবং দোষীদের শাস্তিসহ চার দফা দাবিতে শনিবার সন্ধ্যা থেকে ধর্মঘটের ডাক দেয় স্বাচিপ ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেয় জেলার সব বেসরকারি হাসপাতাল।

তা ছাড়া হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ এনে শনিবার রাতে জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান সোহান জামালপুর সদর থানায় মামলা করেন। এতে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরসহ পাঁচ জন এবং অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামি করা হয়। মামলার পরই সাইদুর ও শহিদুল্লাহ নামের দুই জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

কয়েক দিন চিকিৎসা সেব বন্ধ থাকায় রোগীদের সীমাহীন ‍দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

এদিকে একই দাবিতে মঙ্গলবার থেকে চলা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্রাইভেট চেম্বারের ধর্মঘটও স্থগিত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বাচিপ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহাম্মদ গোলন্দাজ। তিনি বলেন, ‘জামালপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আমাদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে।’

অন্যদিকে বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নেত্রকোণা জেলা বিএমএ সাধারণ সম্পাদক এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আহসান কবীর।

সকাল সাতটা থেকে নেত্রকোণায় চিকিৎসকেরা ধর্মঘট শুরু করেন। এ সময় তারা হাসপাতালের বহির্বিভাগে ও প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধ রাখেন। তা ছাড়া কোনো প্রাইভেট হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয়নি। এতে রোগীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

তবে হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগ ও আন্তবিভাগে চিকিৎসাসেবা অব্যাহত ছিল। বহির্বিভাগে আসা রোগীদের হাসপাতাল থেকে টিকিট নিয়ে জরুরিবিভাগে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এতে জরুরি বিভাগে রোগীদের ভিড় বেশি হয়।

এ বিভাগের আরো খবর