সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে দেখা দিয়েছে ফাটল।
নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রুহেল আহমদ মনোনয়ন পেয়েছেন। এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাবেল ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ পাপলু।
তারা দুই জনই ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার। তাদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম রাবেল বর্তমান মেয়র। আর জাকারিয়া আহমদ পাপলু সাবেক।
রাবেল বলেন, ‘বর্তমান মেয়র হিসেবে পৌরসভার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচন করব।’
আর সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু বলেন, ‘জনগণ আমাকে চায়। তাই আমি নির্বাচনে প্রার্থী হব।’
২০০২ সালে গোলাপগঞ্জ পৌরসভা গঠনের পর প্রথম নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন জাকারিয়া আহমদ পাপলু। এরপর টানা তিনবার জয়ী হন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হলে ২০১৫ সালে পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পান পাপলু। সেবার পরাজিত হন বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল জব্বারের কাছে।
সিরাজুল জব্বারের মৃত্যুতে ২০১৮ সালে উপনির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে পরাজিত হন পাপলু।এই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রাবেল। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি।
আগামী ৩০ জানুয়ারি গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। মেয়র পদে এবারও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন পাপলু ও রাবেল।
কিন্তু সবাইকে চমকে ক্ষমতাসীন দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন গোলাপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহেল।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন মো. রুহেল আহমেদ
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া রুহেল বলেন, ‘আমি আশা করি সকল নৌকাপ্রত্যাশী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করবেন। দলীয় নেতাকর্মীদের সহযোগিতা ও জনগণের ভালবাসায় গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় নৌকাকে জয় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব।’
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল গত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই তাকে এবারের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আর সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু দুই বার নৌকা প্রতীক পেয়ে পরাজিত হওয়ায় তাকেও এবার নৌকার টিকেট দেয়া হয়নি।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। তবে দলীয় কোন্দল ও বিদ্রোহীদের কারণে এখানে প্রতি বার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পরাজিত হচ্ছেন।
গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতারা আরও বলছেন, গোলাপগঞ্জে আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত। স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের অনুসারী ও তার বিরোধীদের নিয়ে দুটি গ্রুপ কাজ করছে।
কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।
এদিকে মেয়র পদে এবার গোলাম কিবরিয়া শাহিনকে একক প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। আর জাতীয় পার্টি থেকে লড়বেন জমির উদ্দিন আহমদ।