রংপুরের বদরগঞ্জের বিএনপির সমর্থন আগে থেকেই কম। সেখানে জামায়াতের শক্তি বেশি। দলটির প্রার্থী না থাকায় বিএনপি আশা করছিল তাদের ভোট পড়বে ধানের শীষে। কিন্তু সেটি হলো না।
আগে থেকেই দুর্বল অবস্থানে থাকা বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী চার জনের মধ্যে চতুর্থ হয়েছেন। ২৯৮ ভোট পেয়েছেন দলের নেতা ফিরোজ শাহ।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সাদ্দাম হোসেনও ভালো করেছেন। তার মার্কা হাতপাখা প্রতীকে ভোট পড়েছে ৩৭২টি।
১৯৭১ সালের আলবদর ও বর্তমানে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বাড়ি এখানে। দলটি অতীতে এই এলাকায় ভালো ভোটই পেয়ে এসেছে।
জামায়াত প্রার্থী না দেয়ায় বিএনপি আশা করছিল, তাদের পক্ষে যাবে সমর্থন। আর এতে লড়াই হবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে।
বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কমল লোহানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ভোট বিএনপির জন্য লজ্জার। এটা আমরা কখনই প্রত্যাশা করিনি।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও ২০১০ সালের পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। তখন আমি কিশোর। তবুও সাড়ে পাঁচশ ভোট পেয়েছি। ২০১৫ সালে পরিতোষ চক্রবর্তী পেয়েছেন ৫৫৫ ভোট।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী টিটু মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। ছবি: নিউজবাংলা
২০১৪ সালের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের প্রার্থী বায়েজীদ ওসমানী ৪২ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। তার আগের উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনি ৫৬ হাজার ভোট পেয়েছিলেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি পরিতোষ চক্রবর্তী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হয়তো অনেকেই আমাদের ধানের শীষে ভোট না দিয়ে অন্য প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে।’
বিএনপি প্রার্থী ফিরোজ শাহের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট কমল লোহানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু স্থানীয় নির্বাচন। তাই আত্মীয়তার সম্পর্কেও দলের অনেক লোকজন প্রতীক না দেখে অন্য প্রার্থীকেও ভোট দেয়। সেটাও হতে পারে। তাছাড়া গ্রুপিং হওয়ার কারণে ভোটের এই দশা হতে পারে। কেন এত কম ভোট পেলেন প্রার্থী বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে এই পৌর এলাকায় প্রায় ১২শ ভোট রয়েছে জামায়াতের। তাদের অনেককে অন্য প্রার্থীর সঙ্গে কাজ করতে দেখেছি। যেটি কাম্য ছিল না। কারণ, আমরা জেলা জামায়াতের আমির গোলাম রব্বানীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা হয়তো আমাদের ভোট দেয়নি।’
রংপুর জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘অবাধ সুষ্টু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিয়েছি আমরা। কোথাও কোনো অভিযোগ নেই। এই নির্বাচনে ৭৫ শতাংশ মানুষ ভোট প্রয়োগ করেছেন।’
কে কত ভোট পেলেন
নয় হাজার ৭৩৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী টিটু।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়া আজিজুল ইসলাম। তার ভোট সংখ্যা চার হাজার ৪৭৮টি।