সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ‘ধর্ষণচেষ্টার’ বর্ণনা দিয়েছেন মেয়েটির বাবা।
রোববার সকালে উপজেলার পৌর শহরে মেয়েটির বাবার সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।
এদিকে এ ঘটনায় সুনামগঞ্জে মানববন্ধন করেছে ‘নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধ কমিটি’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
ওই কলেজছাত্রীর বাবা জানান, তার ছোট মেয়ে সিলেটে বড় বোনের বাড়ি থেকে দিরাইয়ে ফিরছিল। বড় মেয়ের স্বামী ওই মেয়েটিকে ফাহাদ অ্যান্ড মাইশা পরিবহনের একটি বাসে তুলে দেয়।
তিনি আরও জানান, দিরাইয়ের বদিপুর এলাকায় বাকি যাত্রীরা নেমে গেলে বাসটি খালি হয়ে যায় ও একমাত্র যাত্রী হিসেবে রয়ে যায় তার মেয়ে। বাসে ছিল ড্রাইভার ও হেলপার।
ছাত্রীর বাবা জানান, সুজানগর আসার পর মেয়েটির হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে নেয় হেলপার; তুলে দেয় ড্রাইভারের হাতে। মেয়েকে এ সময় উত্ত্যক্ত করা শুরু করে তারা। এক পর্যায়ে তার চুলে হাত দিলে ও হাত ধরে টান দিলে ভয় পেয়ে যায় সে। পরে সাহস করে কৌশলে বাসের জানালা দিয়ে লাফ দেয়।
বাবার বর্ণনা অনুযায়ী, লাফিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যায় মেয়েটি। সে সময় এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক তাকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। জ্ঞান ফিরলে মেয়ে তার পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ফোন করে। ফোন পেয়ে পরিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়।
চিকিৎসক মেয়েটির উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
‘এ রকম ঘটনা যাতে আর কারও সাথে না ঘটে, সে জন্য আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’, বলেন মেয়ের বাবা।
শনিবার রাতেই মেয়েটির বাবা অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন। তবে এখনও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
মানববন্ধন
দিরাইয়ে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ‘ধর্ষণচেষ্টা’র প্রতিবাদ ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।
রোববার সকালে সুনামগঞ্জ শহরের আলফত উদ্দিন স্কয়ারে এ মানববন্ধন করে ‘নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধ কমিটি’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন।
মানববন্ধনে চলন্ত বাসে ‘ধর্ষণচেষ্টা’র ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানানো হয়।
অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়ার দাবি এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য পুলিশ ও প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আসাদ মনিসহ আরও অনেকে।