রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে ঝোলানো ‘বীরচিহ্ন’ নজর কাড়ছে সবার।
একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ দিয়ে আঁকা বালিয়াকান্দির মানচিত্র এই ‘বীরচিহ্ন’। এর দু্ই পাশে লেখা আছে তাদের নাম।
বিজয় দিবসের দিন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে মানচিত্রটি বসায় উপজেলা প্রশাসন।
১০ ফুট লম্বা ও ৭ ফুট চওড়া সাদা ক্যানভাসে ১১০ জন মুক্তিযোদ্ধার হাতের ছাপে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বালিয়াকান্দির এই মানচিত্রটি। ছাপ দেয়ার পর মারা গেছেন পাঁচ জন।
মানচিত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলার জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ধরে রাখতে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম হেদায়েতুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘গত একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে তা থেমে যায়।’
এর মধ্যে বদলি হয়ে যান ইউএনও হেদায়েতুল। পরে আবার হাতের ছাপ সংগ্রহের কাজ শুরু করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম আবু দারদা ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অজয় হালদার।
সহকারী কমিশনার আবু দারদা জানান, বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এলে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ সংগ্রহ করে রাখা হতো। অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতের ছাপ তাদের বাড়িতে গিয়েও সংগ্রহ করা হয়েছিল।
সংগ্রহ করা হচ্ছে হাতের ছাপ। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মতিন ফেরদৌস বলেন, “সাবেক ইউএনও হেদায়েতুল একদিন আমাকে ডেকে বলেন, ‘আপনারা এ অঞ্চল স্বাধীন করেছেন। আপনাদের কোনো স্মৃতিচিহ্ন রেখে যাওয়া উচিত।’ হাতের ছাপে মানচিত্র আঁকার তার প্রস্তাব আমি গ্রহণ করি। নিঃসন্দেহে এটি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।’’
উপজেলার বর্তমান ইউএনও আম্বিয়া সুলতানা জানান, এখনো কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার হাতের ছাপ নেয়া সম্ভব হয়নি। ওই ছাপগুলো পরে ক্যানভাসে যোগ করার সুযোগ আছে।