বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অরক্ষিত শতবর্ষী মুদ্রণযন্ত্র

  •    
  • ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১০:০৫

১৯০০ সাল থেকে এই মুদ্রণযন্ত্র দিয়ে প্রকাশিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই। স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন বইও ছাপা হতো এই মুদ্রণযন্ত্র দিয়ে। ১৯৬৫ সালে জেলা কাউন্সিল এখানেই ছাপায় ‘পাক্ষিক জনকল্যাণ’।

১২৭ বছর আগে পত্রিকা ও লিফলেট ছাপানোর জন্য যশোর জেলা পরিষদ ভবনে স্থাপন করা হয়েছিল ছাপাখানা। মুজিব সড়ক সম্প্রসারণের জন্য চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ ভবনের একাংশ ভেঙে ফেলা হয়। এই ভাঙনের মধ্যে পড়েছে ছাপাখানাটিরও কিছু অংশ।

১৮৯৩ সালে স্থাপিত ছাপাখানা এখন উন্মুক্ত অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে আছে। যেকোনো সময় চুরি হয়ে যেতে পারে ব্রিটিশ আমলের মুদ্রণযন্ত্র।

১৯০০ সাল থেকে এই মুদ্রণযন্ত্র দিয়ে প্রকাশিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই। স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন বইও ছাপা হতো এই মুদ্রণযন্ত্র দিয়ে। ১৯৬৫ সালে জেলা কাউন্সিল এখানেই ছাপায় ‘পাক্ষিক জনকল্যাণ’।

১৯৮৩ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদ গঠনের পর ওই বছরই তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবদুল আওয়াল জেলা পরিষদ চত্বরে দোতলা ভবন বানিয়ে সেটি সাহিত্য পরিষদকে বরাদ্দ দেন। মুদ্রণযন্ত্রটিও সাহিত্য পরিষদকে উপহার দেয়া হয়।

যশোরের সাহিত্য আন্দোলন ও নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাহিত্য পরিষদের রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা।

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হাসান আজিজুল হক, ড. মো. মনিরুজ্জামান, হেলাল হাফিজ, রফিক আজাদ, আহসান হাবীব, নির্মলেন্দু গুণের মতো দুই বাংলার খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিকরা একাধিক বার যোগ দিয়েছেন যশোর সাহিত্য পরিষদের বিভিন্ন আয়োজনে। ব্রিটিশ আমলের এই ছাপাখানায় তাদের অনেক লেখা ও আন্দোলনের নথিপত্র ছাপা হয়েছে।

আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র আসার পর এই ছাপাখানা আর ব্যবহার করা হয় না।

যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছাপাখানাটি এই উপমহাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এর সঙ্গে আমাদের ইতিহাস জড়িত। কিন্তু এখন এটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। এটি সংরক্ষণ করা উচিত।’

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, মুজিব সড়ক সম্প্রসারণের জন্য ভবনটির তিন ফুট ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওই ভবনের তিন ফুট ভেঙে দিয়েছে।

তবে যশোর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক শাহিন ইকবাল অভিযোগ করেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য ভবনের তিন ফুট ভেঙে ফেলা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বাকি বৃহৎ অংশ যা এখনও ব্যবহার উপযোগী তা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না জেলা পরিষদ। ফলে ঐতিহাসিক মুদ্রণযন্ত্রটি অযত্নে রাস্তার ধারে পড়ে আছে।

এ ভবন ভাঙার প্রতিবাদে ১৮ ডিসেম্বর মানববন্ধন ও সাহিত্য পরিষদ সংস্কার করে রক্ষার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, উদীচী যশোরের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লবসহ আরও অনেক সংস্কৃতিকর্মী।

এ বিভাগের আরো খবর