সিলেটে রায়হান আহমদের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত বহিষ্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার আইনজীবী মিসবাউর রহমান আলম। বৃহস্পতিবার এই মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন তিনি।মানুষের বিরূপ মন্তব্য ও বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে এই মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন মিসবাউর রহমান আলম।এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর আকবরের পক্ষে আইনি লড়াই চালানোর জন্য ওকালতনামা জমা দেন মিসবাউর।যদিও রায়হানের মৃত্যুর পর তার বাড়িতে গিয়ে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারা জানিয়েছিলেন, এই মামলায় আসামিদের পক্ষে সিলেটের কোনো আইনজীবী লড়বেন না।আইনজীবী সমিতির নেতাদের এমন বক্তব্যের পর রায়হান হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আকবরের পক্ষে মিসবাউর ওকালতনামা জমা দেয়ায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনলাইনে অনেকেই এই আইনজীবীকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন।মিসবাউর রহমান আলম বলেন, ‘কেবল আমাকে নিয়ে নয়, আমার সিনিয়র আইনজীবী এবং আমার পরিবার নিয়েও অনেকে বাজে মন্তব্য করেন। যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমিসহ আমার পরিবারকে যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না হয় তাই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির এই সদস্য বলেন, ‘অধিক অর্থ প্রাপ্তি নয় বরং পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই আমি এই মামলা নিয়েছিলাম। হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনের মামলাটি আমার কাছে ছিল একেবারেই নতুন ধরনের ও চ্যালেঞ্জিং।সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এটিএম ফয়েজ বলেন, ‘রায়হান হত্যা মামলার আসামিদের পক্ষে সিলেটের কোনো আইনজীবী লড়াই করবেন না এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত আইনজীবী সমিতি নেয়নি। আমরা আইনগতভাবে এ রকম সিদ্ধান্ত নিতেও পারি না। রায়হান হত্যার ঘটনায় সব মানুষের মতো সিলেটের আইনজীবীরাও ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ থেকেই আমি বলেছিলাম, সিলেটের আইনজীবীরা আসামিদের পক্ষে থাকবেন না। তবে কেউ আসামিদের পক্ষে আইনি লড়াই চালাতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া বা অশোভন মন্তব্য করা সংবিধান ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থি। গত ১১ অক্টোবর সকালে মারা যান নগরীর আখালিয়ার বাসিন্দা রায়হান আহমদ (৩৪)। বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে এনে নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই রাতেই হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তামান্না আক্তার।মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে নির্যাতনের সত্যতা পায়। এই ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার জনকে ১২ অক্টোবর বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়। ১৩ অক্টোবর পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যান বন্দরবাজার থানার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা আকবর।গত ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভারতে পালানোর সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করে পুলিশ।এই মামলায় আকবর ছাড়াও তিন পুলিশ সদস্য জেল হাজতে রয়েছেন। মামলাটির তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ফাঁড়িতে হত্যা: আকবরের পাশে নেই সেই আইনজীবী
বহিষ্কৃত এসআই আকবরের আইনজীবী মিসবাউর রহমান আলম বলেন, ‘কেবল আমাকে নিয়ে নয়, আমার সিনিয়র আইনজীবী এবং আমার পরিবার নিয়েও অনেকে বাজে মন্তব্য করেন। যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমিসহ আমার পরিবারকে যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না হয় তাই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।’
-
ট্যাগ:
- রায়হান
এ বিভাগের আরো খবর/p>