বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হলুদ সৌন্দর্যে মধুর ঘ্রাণ

  •    
  • ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ১১:৪৭

প্রতি বছর মানিকগঞ্জের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল জুড়ে সরিষার চাষ হয়। এসব ক্ষেতের পাশে সারিবন্ধভাবে মৌ-বাক্স বসান বিভিন্ন জেলার মৌয়ালরা। এই বাক্সগুলো ভাগ্য পরিবর্তন করেছে অনেকের।

যতদূর চোখ যায় হলুদ আর হলুদ। বাতাসে মাতাল করা ফুলের ঘ্রাণ। আর হলুদের চাদরে ঢাকা এসব মাঠে ব্যস্ত মৌমাছির দল। মন মাতানো এ দৃশ্যের দেখা মেলে মানিকগঞ্জের সরিষার ক্ষেতগুলোতে।

প্রতি বছর মানিকগঞ্জের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল জুড়ে চাষ করা হয় সরিষা। আর এসব ক্ষেতের পাশে সারিবন্ধভাবে মৌ-বাক্স বসান বিভিন্ন জেলার মৌয়ালরা। এই বাক্সগুলোই ভাগ্য পরিবর্তন করেছে অনেক মৌয়ালের। লাভজনক হওয়ায় এখন আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় চাষিদের মধ্যেও।

তবে শুধু মধুতে ভাগ্য পরিবর্তন নয়, মৌমাছির মাধ্যমে পরাগায়ন হওয়ায় চাষিদের ফলনও বেড়েছে দ্বিগুণ।

জেলা কৃষি অফিস জানায়, মানিকগঞ্জের সাত উপজেলায় ৩৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এসব সরিষা ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ চলবে আগামী এপ্রিল পর্যন্ত। সংগ্রহ করা যাবে প্রায় ৮০ টন মধু। যার বাজার মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা।

জেলার বিভিন্ন সরিষা ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশে সারিবন্ধভাবে বসানো হয়েছে কয়েকশ মৌবাক্স। সকালে মধু সংগ্রহের জন্য খুলে দেয়া হয় এগুলো। মৌমাছিরা ফুলে ফুলে বসে মধু সংগ্রহ করে তা বাক্সের চাকে জমা করে।

সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবন্ধভাবে বসানো মৌবাক্স। ছবি: নিউজবাংলা

সপ্তাহে একবার এসব বক্স থেকে মধু সংগ্রহ করেন মৌয়ালরা। মেশিনের মাধ্যমে সেই মধু সংরক্ষণ করে করা হয় বাজারজাত।

রাজবাড়ীর পাংশা গ্রামের বিদেশফেরত মাহফুজুর রহমান বলেন, ভাগ্য পরিবর্তনের বিদেশে গিয়েছিলেন তিনি। প্রতারিত হয়ে দেশে ফেরার পর তিন বছর ধরে মধু সংগ্রহের কাজ করছেন তিনি। বিদেশে যত টাকা বেতন পেতেন, এখন মধু সংগ্রহ করে তার চেয়ে বেশি আয় করছেন।

রাজবাড়ীর বাদশা মিয়া নামের আরেক মৌয়াল বলেন, মানিকগঞ্জে সরিষা ফুলের ভালো আবাদ হওয়ায় মধু সংগ্রহের জন্য এখানে এসেছেন। মানিকগঞ্জের মাধ্যমে তারা মধু সংগ্রহ শুরু করেন। এরপর ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, ঈশ্বরদী, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুরসহ বিভিন্ন জেলায় আগামী পাঁচ মাস মধু সংগ্রহ করবেন।

তিনি বলেন, সংগ্রহ করা এসব মধু বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন তারা। বর্তমানে তার খামারে চার জন কাজ করছেন। খরচ বাদে প্রতি মাসে তার প্রায় এক লাখ টাকার মতো আয় হয়।

স্থানীয় মেহেদী হাসান জানান, মধুর গুণগত মান ভালো হওয়ায় ৫০০ থেকে দিয়ে এক কেজি মধু কিনেছেন। শীতের সময় বাড়ির শিশুরা মধু খায়। মূলত এ কারণেই মধু কিনেছেন।

মৌয়ালদের পরার্মশদাতা ও বাংলাদেশ কুটির শিল্প মৌচাক প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক খোন্দকার আমিনুজ্জামান জানান, সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২৫ হাজার মৌখামারি কাজ করেন। এ বছর প্রায় ১০ হাজার টন সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে পারবেন মৌয়ালরা। মধু সংগ্রহ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বেকার যুবকদের এতে আগ্রহ বাড়ছে।

মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের প্রশিক্ষণের জন্য দেশে ছয়টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর