নির্বাচিত হতে পারলে বরিশালের উজিরপুর পৌরসভাকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন এখানকার মেয়র প্রার্থীরা। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে প্রথমেই সড়কবাতির কাজ করতে চান প্রার্থীরা। তাই নির্বাচিত হতে ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে পৌরসভাজুড়ে।
২৮ ডিসেম্বর ২৫ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২০১৩ সালে গঠিত উজিরপুর পৌরসভায় এবারে দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভোট।
এই পৌরসভায় এবার প্রতিদ্বন্দিতা করবেন তিন মেয়র প্রার্থী, আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গিয়াস উদ্দিন বেপারী, বিএনপির শহিদুল ইসলাম খান ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কাজী শহিদুল ইসলাম।
গিয়াস উদ্দিন বেপারীর দাবি, গতবারের ইশতেহারের ৮০ ভাগ কাজ তিনি শেষ করেছেন। পৌরসভা এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ করেছেন ৮০ ভাগ, কিছু এলাকায় লাগিয়েছেন সড়কবাতি। এছাড়া ড্রেনের কাজও আংশিক শেষ করেছেন। নির্বাচিত হতে পারলে এই মেয়াদে বাকি কাজগুলোও করে ফেলবেন।
গিয়াস নিউজবাংলাকে জানান, তিনি ১৯৯১ সালে উজিরপুর বিএনখান কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৯৩ সালে থানা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৯৭ ও ২০০৪ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ২০১২ সালে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এবং ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দুঃসময়ে মানুষ তাকে পাশে পেয়েছে। তাই তারা তাকেই আবার নির্বাচিত করবে।
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শহিদুল ইসলাম খান। ছবি: নিউজবাংলাএদিকে বিএনপির প্রার্থী শহিদুল জানান, বিএনপির নির্বাচনী মাঠ সবসময় ভালো। কিন্তু ভয়ভীতি ও পুলিশি হয়রানিতে তিনি বিব্রত। বিভিন্ন ভাবে তাকে হুমকি দেয়া হলেও নির্বাচনী প্রচারে কেউ বাধা দেয়নি।
নির্বাচিত হলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করবেন, রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, সুয়ারেজ লাইনের কাজ করবেন। পাশাপাশি কিশোর গ্যাং দমন ও এলাকাকে মাদকমুক্ত করার আশ্বাস দেন শহিদুল।
বর্তমানে উজিরপুর পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল জানান, ১৯৭৮ সাল থেকে তিনি রাজনীতি করেন। ২০১৫ সালে রাজনৈতিক মামলায় সাত মাস কারাগারে ছিলেন। সেই সহানুভূতির জায়গা থেকেও মানুষ তাকে ভোট দেবে। এছাড়া মানুষ তাকে এমনিতেও ভালোবাসে।
জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী আরেক প্রার্থী কাজী শহিদুল ইসলামও।
নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী গিয়াস ঠিকাদার, শহিদুল ইসলাম খান ব্যবসায়ী, কাজী শহিদুল ইসলাম ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
গিয়াসের ব্যবসা থেকে আয় ১০ লাখ ১৩ হাজার টাকা ও মেয়র সম্মানিভাতা থেকে দুই লাখ ৮৮ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ নয় লাখ ৫২ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং সাত লাখ ৫০ হাজার টাকার একটি ডেলিভারি ভ্যানগাড়ি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বেপারী। ছবি: নিউজবাংলাস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ১২ শতাংশ কৃষিজমি এবং ১৮৩.০৬ বর্গমিটারের একটি অ্যাপার্টমেন্ট যার মূল্য ৪০ লাখ টাকা। এছাড়া তার আর কোনো সম্পদ বা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দেনা নেই বলে জানিয়েছেন।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, গিয়াসের স্ত্রী ফারজানা ফেরদৌসির শিক্ষকতা দিয়ে বার্ষিক আয় চার লাখ ৫২ হাজার ২৯৫ টাকা। নগদ অর্থ আছে ছয় লাখ ৭৯ হাজার ১৫৮ টাকা। তিনি ৩ একর কৃষি ও ৫০ শতাংশ অকৃষি জমি এবং ২৫ ভরি স্বর্ণের মালিক।
বিএনপির প্রার্থী শহিদুলের কৃষিখাত থেকে বার্ষিক আয় ২০ হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া উপহার হিসেবে পাওয়া পাঁচ ভরি স্বর্ণ, টিভি, সোফা ও ৩০ শতাংশ কৃষিজমি আছে।
ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী শহিদুল হলফনামায় জানিয়েছেন, কৃষিখাত থেকে তার বার্ষিক আয় এক লাখ টাকা এবং ব্যবসা থেকে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা। সোফা ও খাট ছাড়া তার কোনো সম্পত্তি নেই।