ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শৈত্যপ্রবাহ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শীতকালীন রোগের প্রকোপ বেড়েছে যশোরে। চলতি মাসের ২২ দিনেই নভেম্বর মাসের চেয়ে বেশিসংখ্যাক রোগী ভর্তি হয়েছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, আমাশায়, জলবসন্তসহ শীতকালীন রোগে নভেম্বর মাসে আক্রান্ত হয়েছিল ১৫০ জন। ডিসেম্বরের ২২ দিনে এসব রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েছে ৩০ জন। শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও নভেম্বর মাসের তুলনায় বেশি। শ্বাসকষ্টের রোগীরা শীতকালে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুই দিন হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ফলে হাসপাতালের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে অনেক রোগীকে।
যশোর সদরের চাঁনপাড়া এলাকার নাসরিন বেগম শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পেলেও শ্বাসকষ্ট বাড়লে আইসিইউ সুবিধা না থাকায় স্ত্রীকে নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছিল স্বামী মুকুল হোসেনকে।
মুকুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতালে আইসিইউ না থাকলে আমাদের মতো গরিব মানুষদের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নেয়া সম্ভব না।’
শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোকেয়া খাতুনের স্বামী খলিল রহমানও হাসপাতালে ভোগান্তির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, অন্য রোগীদের জন্য চিকিৎসা পাওয়া গেলেও, শ্বাসকষ্টের রোগীদের ভোগান্তিতে পোহাতে হয়। শ্বাসকষ্ট বেশি হওয়াতে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাকে।
যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক দেবাশীষ দত্ত বলেন, অন্য বছরের তুলনায় রোগীর সংখ্যা সামান্য বেশি। এখনও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে এ বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে শঙ্কাও আছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় জানান, অল্পদিনের মধ্যেই আইসিইউ চালুর প্রক্রিয়া চলছে। আইসিইউ চালু হলে সংকট দূর হবে।
আইসিইউ দ্রুত চালু হওয়ার কথা বললেও বাস্তবে এর কোনো অগ্রগতি নেই। আসলেই দ্রুত হবে কি না সেটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি কেবল তার হাতে নেই। মন্ত্রণালয়সহ আরও অনেকের ওপর নির্ভর করছে।