ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে সেতরা নদীর ওপর পাঁচ দশকেও নির্মাণ হয়নি সেতু। স্থানীয়রা সেখানে পারাপার হয় বাঁশের সাঁকোতে।
আড়াই ফুট চওড়া এই সাঁকোটি অন্তত ২০টি গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরে চলাচলের একমাত্র উপায়।
মুক্তিযুদ্ধের পরপর স্থানীয়রা নিজেদের টাকায় অরুয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণে প্রবাহিত সেতরা নদীর ওপর ৭০০ ফুট দীর্ঘ সাঁকোটি নির্মাণ করেন।
এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেই অরুয়াইল বাজারে ব্যবসা করেন ২০ গ্রামের মানুষ। বাজারের পাশেই রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গ্রামের শিশুরাও ঝুঁকি নিয়ে পার হন এই সাঁকো। এতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে স্কুলগামী ও বৃদ্ধদের জন্য আড়াই ফুট চওড়া এই সাঁকোটি পার হওয়া চ্যালেঞ্জ।
অরুয়াইল বাজারটি মফস্বলের একটি বাজারের তুলনায় বেশ সমৃদ্ধই বলা যায়। সেখানে আছে স্কুল, কলেজ- নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, অরুয়াই ইউনিয়নের যতগুলো গ্রাম আছে, সবগুলো থেকে একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে ১৫ জনকে সাঁকোটি দেখভালের দায়িত্ব দেয়া আছে। তারা পারাপারের জন্য দুই টাকা করে নেন। এই টাকা দিয়েই সাঁকোটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
বাজারের ব্যবসায়ী রহিস মিয়া বলেন, ‘আজকা যদি পাকা বিরিজ থাকত, তাইলে ব্যবসা আরও বালা অইত। বেচাকেনা বাড়ত। টিভিত পত্রিকাত দেহাইয়া এইডা পাকা করার ব্যবস্থা কইরা দেন।’
স্থানীয় সাংবাদিক ও সমাজকর্মী মনসুর আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুধু অরুয়াইল ইউনিয়ন নয়, আশোপাশের এলাকার মানুষও ব্যবহার করে এই সাঁকো। যদি কোনো কারণে এটি ভেঙে যায় তাহলে দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।’
অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে জানান, ‘পাকা ব্রিজ করার জন্য অনেক চেষ্টা করে আসছি। স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও, পদক্ষেপ নেননি তারা। আশ্বাস দিয়ে গেলেও আজও এই সাঁকোর কোনো গতি হচ্ছে না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল হক মৃদুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যক্তি উদ্যোগে সাঁকোটির বিষয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই বিষয়টি আমাকে জানালে এলজিইডির কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে দেখব।