খুলনার দাকোপ উপজেলার চালনা পৌরসভা নির্বাচনে প্রাধান্য পাচ্ছে সুপেয় পানির বিষয়টি। উপকূলের এই জনপদের নদীগুলোতে লোনা পানি থাকায় সেখানে খাওয়ার পানির সংকট থাকে বছরজুড়ে।
২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর চালনা পৌরসভা ১৬ বছর পার করলেও এখন সুপেয় নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত হয়নি। স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে পৌরবাসী বাধ্য হয়েই পুকুরের পানি পান করছেন।
২৮ ডিসেম্বরের ভোটের প্রচারে প্রার্থীদের অঙ্গীকার আর ভোটারদের দাবি দাওয়ায় উঠে আসছে সুপেয় পানি সরবরাহের বিষয়টি।
চার মেয়র প্রার্থীসহ ৩৭ কাউন্সিলর প্রার্থী ভোটারদের মন জয়ে মাঠে নেমেছেন।
পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ হাজার ৮৬৩ ও নারী ভোটার ছয় হাজার ২৩৭ জন।
নয়টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন ২৭ জন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ১৩ জন, বিএনপির রাজনীতি করেন আট জন। বাকি প্রার্থীদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় নেই।
হলফনামা অনুসারে, প্রার্থীদের মধ্যে কৃষিকাজ করেন ১৪ জন, ব্যবসায়ী ১৩ জন।
প্রার্থীদের মধ্যে স্নাতকোত্তর পাঁচজন। ১১ জনই অষ্টম শ্রেণি পাস। স্বাক্ষর জ্ঞান আছে তিন জন এবং একজন চতুর্থ শ্রেণি পাস। এইচএসসি পাস ছয় জন এবং মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১০ জন।
তিনটি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১০ জন। হলফনামা অনুসারে অধিকাংশেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে, পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন গৃহিণী।
এই পৌরসভায় ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে। রিটার্নিং কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলাম জানান, ভোটের দুই দিন আগে ২৬ ডিসেম্বর ইভিএমে মক ভোট হবে। ভোটারদের হাতে কলমে শেখানো হবে ভোট কীভাবে দিতে হয়।
খুলনার চালনা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী গৌতম কুমার রায়। ছবি: নিউজবাংলা
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস, বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল খয়ের খাঁন, স্বতন্ত্র প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মন্ডল এবং গৌতম কুমার রায়।
সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অধ্যক্ষ ড অচিন্ত্য কুমার মন্ডল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে আশাবাদী। তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়ে আমার নেতাকর্মীদের প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘দলের বিদ্রোহী একটি অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে পরোক্ষভাবে কাজ করছে। নির্বাচনের পরিবেশ ভালো, জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’
বিএনপির প্রার্থী আবুল খয়ের খাঁন অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে মোজাফফর হোসেন শেখ প্রচার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘নৌকার কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন সময় প্রচার-প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি করছে। কালো টাকার ছড়াছড়ি চলছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি জয়লাভ করবে।’
প্রথমবারের মতো মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন গৌতম কুমার রায়। তার অভিযোগ, প্রভাবশালী দুই প্রার্থী টাকা ছড়াচ্ছেন। তিনি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছেন।
রাজনীতিতে জড়িত না থাকলেও নিজেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিতলে ক্ষমতাসীন দলে যোগ দেবেন।