বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পানের বরজে ছড়িয়ে পড়ছে রোগ

  •    
  • ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:১৪

এ অবস্থায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জেলা কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগের কথা বলা হচ্ছে। তবে কৃষকরা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে বরজে ওষুধ ছিটিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা।

তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশার কারণে বাগেরহাট জেলার পানের বরজগুলোতে দেখা দিয়েছে নানা রোগ। গেল অক্টোবর মাসের ভারি বর্ষণেরর পর সৃষ্ট বন্যায় জেলার পান বরজগুলো প্লাবিত হয়েছিল।

সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই পান গাছের পাতা হলুদ হয়ে ঝড়ে পরা ও পাতাপচা রোগসহ ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার পান চাষিরা।

এ অবস্থায় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জেলা কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ওষুধ প্রয়োগের কথা বলা হচ্ছে। তবে কৃষকরা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে বরজে ওষুধ ছিটিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, এ বছর বাগেরহাট জেলায় ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪৩৫ হেক্টর, চিতলমারি উপজেলায় ৩৯ হেক্টর, ফকিরহাট উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর, মোল্লাহাট উপজেলায় ১৪০ হেক্টর, মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ২৫ হেক্টর, শরণখোলা উপজেলায় ১০ হেক্টর, কচুয়া উপজেলায় ৫ হেক্টর ও রামপাল উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে।

সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের দেওয়ানবাটি গ্রামের মানিক পাল বলেন, ‘সমিতি থেইকে টাকা ওঠায়ে ১৫ কাঠা জমিতে পানের বরাজ করিছি। কয়েক মাস আগে যে বৃষ্টি হইল, তাতে আমার বরাজও ডুবে গেইল। সে সমস্যা যাতি না যাতি কয়েকদিন ধইরে যে ঠান্ডা পরতিছে, তাতে পানের পাতা সব হলুদ হয়ে ঝইড়ে পরতিছে। কুয়াশার কারণে পান গাছের পাতায় কালা কালা দাগ পইরে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এখন আমি কি করবো, সমিতির কিস্তির টাহাই বা দেবো কিরাম করে।’

একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘ শীতির সময় কমবেশি পান গাছে পাতা ঝইড়ে পড়ে। কিন্তু এবার শীত একটু বেশি পরতিছে, আবার কুয়াশা পরতিছে। আমার বরাজের পানও হলুদ হতি শুরু করিছে সাথে পোকের কারণে গাছের মাঝ থেকে ঢইলে পরতিছে। উপজেলা থেকে একজন কৃষি অফিসার আসিল, বরাজ সে দেইখে গেছে। ওষুধ দিছে, তা ছিটাইয়ে দিছি, সাথে বরাজের উপরে নেট জাল দিয়ে দিছি, যাতে ভিতরে কুয়াশা না ঢুকতি পারে। এরপরও কাজ হচ্ছে না।’

কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সিংড়াই গ্রামের মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নেই। ৬ ছেলে-মেয়ে নিয়ে কষ্টে আমার সংসার চলে। সমিতি থেইকে টাকা উঠয়ে বরাজ করিছিলাম। কয়েক মাস আগে বৃষ্টিতে আমার বরাজ তলায়ইয়ে যায়। পরে পানি নাইমে গেলি, সার-ওষুধ দিয়ে বরাজ ঠিক করিলাম। কিন্তু কুয়াশায় তো পাতা সব হলুদ হতি শুরু করিছে। কি করবো বুঝতিছি না।’

একই গ্রামের বিল্লাল শেখ বলেন, ‘আমি ১২ কাঠা জমিতে পান বরাজ করিছি। এ বছর বর্ষায় আমার পান বরজের মধ্যে পানি উঠে গিয়ে বরাজের ক্ষতি হইছিলো। এখন আবার শীত ও কুয়াশার কারণে গাছ থেকে পান ঝইরে পড়ছে। ওষুধ তো দিতিসি, কিন্তু যে ঠান্ডা পরতিছে তাতে তো কোন কাজ হচ্ছে না।’

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘ শীত মৌসুমে কুয়াশার কারণে পান পাতা হলুদ হয়ে ঝড়ে পড়াসহ ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দেয়। শীতের তীব্রতা ও কুয়াশার পরিমাণ বৃদ্ধির সাথে সাথে এ সমস্যাগুলো বাড়তে থাকে। এ সময় পান পাতায় ছত্রাকজনিত কালো দাগও দেখা যায়। তবে এ সমস্যা সমাধানে আমরা কৃষকদের বরাজের ভিতরে কুয়াশা যাতে না ঢুকতে পারে সে জন্য পলিথিন বা নেটজাল দিয়ে ছাউনি দেওয়ার পরাপর্শ দিচ্ছি। এছাড়া বরাজে ছত্রাকের আক্রমণ রুখতে কৃষকদের নিয়মিত ছত্রাকনাশক ঔষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর