ফেনী শহরের দাউদপুর বিজ্রের পাশে পাগলীছড়া খালের পাড়ে জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ানের জমি থেকে ৩০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বুধবার সকাল থেকে নির্মাণাধীন মার্কেটের দোকানগুলো উচ্ছেদ করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম।
উচ্ছেদ হওয়া দোকানগুলোর মালিকরা বলছেন, ফেনী পৌরসভার দুই কাউন্সিলর ও মেয়র জেলা প্রশাসনের জমিতে ঘর নির্মাণ করে জোর করে তাদের কাছে ভাড়া দিয়েছেন।
এসব দোকান ভাড়া ও জামানতবাবদ প্রতি দোকানদার থেকে শুরুতে পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুর রহমান সাইফু, আরেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র আশ্রাফুল আলম গীটার এবং ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজি আলাউদ্দিন। টাকা লেনদেনের চুক্তিপত্রে কাউন্সিলরদের স্বাক্ষরও রয়েছে।
তবে কাউন্সিলরদের দাবি হচ্ছে, পৌরসভার অর্থায়নে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
উচ্ছেদ হওয়া দোকান কোয়ালিটি ট্রেডার্সের মালিক আবদুল কাদের জানান, অভিযানে ফেনী পৌরসভার স্ক্যাভেটর দিয়ে পৌরসভার তত্ত্বাবধানেই ৩০টি দোকান ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে দোকান প্রতি আট থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে এ সব দোকান নিতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে শুরুতেই এই অভিযান হলে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।
ইস্টার্ন ট্রেডিংয়ের মালিক সাইফুল ইসলাম ফটিক জানান, পৌরসভার মার্কেট হবে বলে এই দোকান তাদের কাছে ভাড়া দিয়েছে। চার থেকে পাঁচ মাস আগে ফেনী পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা এখানে কাজ শুরু করেন। আগ্রহী দোকানদাররা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে এসব জায়গার বৈধতা আছে কি না জানতে চাইলে তারা সব ঠিক আছে বলে আশ্বাস দেন।
কালু দাস বলেন, ‘দোকান ভাঙার সময় মেয়র কাউন্সিলর কাউকে দেখলাম না। অথচ প্রায় সময় মেয়র কাউন্সিলর এখানে এসে জায়গা দেখাশোনা করতেন। প্রায় সব দোকান হিসেব করলে কোটি টাকার কম হবে না।’
১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুর রহমান সাইফু বলেন, ‘পৌরসভার অর্থায়নে এসব দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা বৈধ প্রক্রিয়ায় দোকান নির্মাণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি লিখিত আবেদন দিতে বলেছেন। আমরা মেয়রসহ বসে বিষয়টি মীমাংসা করব।’
ফেনী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম বলেন, ‘এই ১২ শতক জায়গা জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ানের। এ জায়গা কাউকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়নি। অভিযানের সময় কেউ জায়গার মালিক দাবি করে সামনেও আসেনি। যার কারণে আমরা কাউকে জেল-জরিমানা করতে পারিনি।’