হত্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে বগুড়ার শিবগঞ্জের শিমুল মিয়াকে (২৫) অপহরণ করে গাইবান্ধায় নিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় করা ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে শিবগঞ্জের এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মেহেদী হাসান মঙ্গলবার রাতে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ এনে বগুড়ার শিবগঞ্জের বিহার ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলামকে প্রধান করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং কয়েক জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। হত্যা মামলাটি করেন নিহতের বড় ভাই ও ইউপি সদস্য রায়হান আলী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম, তার সহযোগী রবিউল ও মিনহাজসহ বাকি আসামিদের সঙ্গে শিমুলের দ্বন্দ্ব ছিল। সোমবার বগুড়ার একটি আদালতে হাজিরা দিয়ে আসার পথে টেংরাবাজার এলাকায় শিমুলের সঙ্গে চেয়ারম্যান মহিদুলের দেখা হয়। এরপর শিমুলকে অপহরণ করে গোবিন্দগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতনের পর তার ডান পা ভেঙে বস্তায় ভরে ধান ক্ষেতে নিক্ষেপ করেন চেয়ারম্যানসহ তার সহযোগীরা।
পেশায় মাছ ব্যবসায়ী শিমুল মিয়ার বিরুদ্ধে শিবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন থানায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও ধর্ষণসহ অন্তত ১১টি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি মেহেদী।
একই থানার ওসি (তদন্ত) আফজাল হোসেন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার গোমানিগঞ্জ (নেংড়াবাজার) এলাকায় শিমুলকে বস্তাবন্দি জীবিত অবস্থায় ধানক্ষেতে পাওয়া যায়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি।
খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে উপজেলার ফুলপুকুরিয়া বাজার থেকে শিমুল মিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পর দিন গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
এর আগে সোমবার আদালত থেকে হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হন শিমুল।
মূলত চেয়ারম্যানের সঙ্গে স্থানীয় নেতৃত্ব ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ওসি আফজাল বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ। মামলাটির তদন্তভার নিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।’
এ বিষয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান বলেন, ‘শিমুলের বড় ভাই রায়হানের বক্তব্যের ভিত্তিতে টেংরাবাজার থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেটি আমরা খতিয়ে দেখব।’