মানিকগঞ্জে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, তরুণীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে পরে ফেরত দেয়াসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। অতিষ্ঠ এলাকাবাসী পুলিশে অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ আছে। এমনকি এক মেয়েকে তুলে নিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে আদালতে করতে হয়েছে মামলা।
এতসব অভিযোগ জেলার হরিরাপুরের বাল্লা ইউনিয়নের আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে। স্থানীয় থানা ব্যবস্থা না নেয়ায় গত ১ ডিসেম্বর জেলার পুলিশ সুপারের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ তুলে ধরে গণস্বাক্ষর পাঠিয়েছে এলাকাবাসী।
তবে দুই সপ্তাহেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে আরিফ। প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় বাল্লাবাসী একই সঙ্গে ভীত এবং ক্ষুব্ধ। অভিযোগকারীরা ভীত এ কারণে যে, আরিফ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে পারেন।
যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ দেয়া হয়েছে পুলিশের কাছে
আরিফ হোসেন বাল্লা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলে নিশ্চিত করেছেন হরিরামপুর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুর রহমান চৌধুরী মিল্টন।
ইউনিয়নটির দক্ষিণ গোড়াইল গ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, তার স্কুল পড়ুয়া ভাগ্নিকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন রিগ্যান। বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় কয়েক মাস আগে ওই স্কুলছাত্রীকে আরিফের সহযোগিতায় অপহরণ করেন রিগ্যান।
হরিরামপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে রাজি না হওয়ায় আদালতে মামলা করেন কামাল। পরে প্রায় ২০ হাজার টাকা ও বেশকিছু স্বর্ণালঙ্কারের বিনিময়ে ভাগ্নিকে ফেরত দেন আরিফ।
যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ দেয়া হয়েছে পুলিশের কাছে
ওই গ্রামের আব্দুল মজিদ বেপারী বলেন, চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় তার ছেলে রিন্টুকে গাঁজা দিয়ে পুলিশ ধরিয়ে দেন আরিফ ও তার সহযোগী শাহিনুর। ১৪ হাজার টাকা দিয়ে তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন আরিফ।
চাঁদা না দেয়ায় আরিফের বিরুদ্ধে মারধর ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন পাশের লোহাচালা গ্রামের কৃষক ইনসান মিয়া।
এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ কোনো অভিযোগই আমলে নেয়নি বলে জানান অভিযোগকারীরা।
তবে, হরিরামপুর থানার ওসি মুঈদ চৌধুরীর দাবি, এসব কিছুই জানা নেই তার।
যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ দেয়া হয়েছে পুলিশের কাছে
এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি আরিফকে। বাবা আওলাদ হোসেনের দাবি, তার ছেলে আরিফ নির্দোষ।
জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো তথ্য তার কাছে নেই।
‘মাদকের, অনৈতিক কাজে জড়িতদের ঠাঁই যুবলীগে হবে না’- বলেন তিনি।
তবে উপজেলা যুবলীগ নেতা মিল্টন বলেন, আরিফের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগের কথা তিনিও শুনেছেন। সরাসরি কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। সেইসঙ্গে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় যুবলীগের পদ পদবি ব্যবহার না করতে আরিফকে অনুরোধ করেন মিল্টন।
জেলা পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, গণস্বাক্ষর তার কাছে পৌঁছেনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।