বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আ. লীগ বানাচ্ছে ভাস্কর্য ‘মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু’

  •    
  • ১৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৯:১১

‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামী লীগের নাম শুনলে স্বাধীনতাবিরোধীদের গাত্রদাহ হয়। তারা জানে না কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু আছেন এবং জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকারীদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করা হবে।’

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দল ও সংগঠনের বিরোধিতার মধ্যে শেরপুর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এবার জাতির পিতার একটি ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

‘মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধু’ নামে জাতির ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের টাকায়। এ জন্য জমিও কিনেছেন দলের নেতারা।

শুক্রবার বেলা ১২ টার দিকে ভাস্কর্যের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক।

শেরপুর শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার থানার মোড়ে এ ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হবে।

এ সময় হুইপ আতিক বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহলের চক্রান্তে শান্তিপ্রিয় দেশকে অশান্তির দিকে নিয়ে যেতেই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছিল। তারা জানেন না বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধু আর বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। কখনওই বাঙালির হৃদয় থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও আওয়ামী লীগের নাম শুনলে স্বাধীনতাবিরোধীদের গাত্রদাহ হয়। তারা জানে না কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু আছেন এবং জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকারীদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করা হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের নিজস্ব জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মিত হবে। খুব দ্রুত এর কাজ শেষ হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে অরাজকতা সৃষ্টির জন্য একটি মহল তৎপর। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি তা নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিহত করবে।‘

অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বশিরুল ইসলাম সেলু, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির আলী সরকার, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কাশেম জিপি, সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্তও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি ধোলাইপাড়ে জাতির জনকের একটি ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর অবস্থান ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

এটি নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রথমে অবস্থান নেয় ইসলামী আন্দোলন। এটি নির্মাণ না করার দাবিতে প্রথমে গত ১৩ নভেম্বর ধূপখোলা মাঠে সমাবেশ করে দলটি। ওই সমাবেশে বলা হয়, তারা এক নং সংকেত দিয়েছেন। দাবি মানা না হলে দেয়া হবে ১০ নং সংকেত।

পরে একই দাবি জানায় ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক হুমকি দেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তারা আরেকটি ৫ মের পরিস্থিতি তৈরি করবেন। এরপর হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী হুমকি দেন, ভাস্কর্য নির্মাণ হলে তারা টেনেহিঁচড়ে ফেলে দেবেন।

তবে শুরুতে চুপচাপ থাকলেও পরে সরকারপন্থিরা মাঠে নামে। তাদের পাল্টা কর্মসূচির পর কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক দল ও সংগঠনের সুর পাল্টে যায়। তাদের বক্তব্য অনেকটা নরম হয়। মামুনুল হক বলেন, তারা ভাস্কর্যের বিরোধী হলেও সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে যাবেন না।

এর মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন একটি ভাস্কর্যে ভাঙচুর চালানো হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে স্থানীয় মাদ্রাসা ইবনি মাসউদের চার ছাত্র ও শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়।

এই মাদ্রাসাটি চরমোনাইয়ের পীরের অনুসারী। আর পুলিশ জানিয়েছে, দুই ছাত্র তাদেরকে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতা ফয়জুল করীম ও হেফাজত নেতা মামুনুল হকের ওয়াজ শুনে ‍উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা ভাস্কর্য ভেঙেছেন। যদিও পরে মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন ভাস্কর্য ভাঙার নিন্দা জানিয়েছে।

এসব ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির ফয়জুল করীম, হেফাজত নেতা বাবুনগরী ও মামুনুলের বিরুদ্ধে হয়েছে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা।

এই ইস্যুতে সারাদেশে প্রশাসন, পুলিশ এমনকি বিচারকরা একযোগে সারাদেশে সমাবেশ করে জানিয়েছে, জাতির পিতার সম্মান তারা অম্লান রাখবেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর রাতে কওমি মাদ্রাসার একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তারা জানিয়েছেন, বৈঠক সফল হয়েছে।

পরদিন মন্ত্রী বৈঠকের ফলাফল হিসেবে বলেন, এই ইস্যুতে ধর্মভিত্তিক দলগুলো আর রাজপথে নামবে না। ভাস্কর্য নির্মাণও অব্যাহত থাকবে। সরকারের মুখপাত্র তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধ হবে না।

এ বিভাগের আরো খবর