ষাড়ের লড়াই প্রতিযোগিতা গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী হিসেবে এখনো অনেক অঞ্চলেই টিকে রয়েছে। সেই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে মহান বিজয় দিবসে মৌলভীবাজার পৌরসভায় আয়োজন করা হয়েছিল ষাড়ের লড়াই।
সেই লড়াই দেখতেই বুধবার নামে হাজারো মানুষের ঢল। শুধু মৌলভীবাজারের নয়, প্রতিযোগিতা দেখতে আশেপাশের জেলাগুলো থেকেও আসেন অসংখ্য মানুষ।
বিজয় দিবসে সেই প্রতিযোগিতায় সব ষাড়কে হারিয়ে শ্রেষ্ঠ হয় মৌলভীবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদ আহমদের বাংলা ভাই নামের ষাঁড়। আর দ্বিতীয় হয়েছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কিং নামের এক ষাঁড়।
আয়োজকরা বলছেন, হারিয়ে যেতে বসা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই সংস্কৃতি ধরে রাখাই তাদের লক্ষ।
প্রাচীন বাংলার ঐতিহাসিক বিনোদনগুলোর মধ্যে অন্যতম ষাঁড়ের লড়াই। সিলেট অঞ্চলে এই প্রতিযোগিতাটি সমাধিক জনপ্রিয়। তাই সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন মৌলভীবাজারের কমিশনার মাসুদ আহমদ।
সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় ষাড়ের লড়াইয়ের এই প্রতিযোগিতাটিকে বলা হয় ‘ডেখা মাইর’।
আমন ধান কাটার পর ফাঁকা মাঠে মাঝখানে বাহারী নামের ষাড়ের সমাবেশ ঘটে। লড়াইয়ে অংশ নিতে মৌলভীবাজার ছাড়াও সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জসহ কয়েক জেলা থেকে ষাড় নিয়ে আসেন মালিকরা। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ৫০টি ষাড়।
আয়োজক কমিশনার মো. মাসুদ আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হবার পর দেশ-বিদেশের অনেকেই আমাকে বলেছেন যেন ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের লড়াই প্রতিযোগিতা চালু করি। এরপর থেকেই আমি প্রতিবছর বিজয় ও স্বাধীনতা দিবসে ষাড়ের লড়াইয়ের আয়োজন করছি।
‘এটা আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, একে ধরে রাখতে হবে। এতে মানুষ আনন্দ পান।’
প্রতিযোগিতায় তার নিজেরও ছয়টি ষাড় অংশ নিয়েছে।
স্থানীয় জমসেদ মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি বছর হাজার হাজার দর্শক ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসেন। এলাকায় এ সময় উৎসব হয়। বিজয় দিবসের পাশাপাশি এই আনন্দ এলাকাবাসীর জন্য বাড়তি খুশি নিয়ে হাজির হয়।’
বুধবার ঐতিহ্যবাহী ষাড়ের লড়াই দেখতে অর্ধলাখের বেশি দর্শক ছিলেন বলে বলেছেন স্থানীয়রা।
দিনব্যাপী ষাড়ের লড়াই শেষে বিজয়ী ষাড়ের মালিকদের মোটরসাইকেল ও টেলিভিশন পুরস্কার তুলে দিয়েছেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান।