বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বীর মুক্তিযোদ্ধার শরীরে এখন নানা রোগের বাসা

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৪:০৮

এখন আর তিনি ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে পারেন না। চিৎকার করে বলতে পারেন না ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা যমুনা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর’।

১৯৭১ সালে আব্দুস শুকুর জমাদ্দারের বয়স ছিল ২৪ বছর। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে জীবনের মায়া ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ছিনিয়ে এনেছিলেন দেশের স্বাধীনতা।

যে বীর মুক্তিযোদ্ধা নিজের শক্ত কাধে রাইফেল রেখে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন তাকে এখন পরের কাঁধে হাত রেখে তাকে হাঁটাচলা করতে হচ্ছে। তরতাজা সেই যুবকটি এখন ৭৩ বছরের বৃদ্ধ। শরীরে নানা রোগ বাসা বেঁধেছে। টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মরতে বসেছেন।

এখন আর তিনি ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে পারেন না। চিৎকার করে বলতে পারেন না ‘তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা-মেঘনা যমুনা’, ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর’।

কেউ পাশ দিয়ে হেটে গেলে শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শুকুর জমাদ্দারের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের চাচই গ্রামে। তার জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে পরিবারে স্ত্রী, চার ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। দুই ছেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। একটি ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ৯ শতাংশ জমির ওপর দুইটি টিনের ঘর ছাড়া তার আর কিছু নেই।

সরকারের দেয়া মুক্তিযোদ্ধা ভাতার ১২ হাজার টাকা দিয়ে সংসার খরচ চালাতে হয়। দুই ছেলে বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। অসুস্থ বাবার কোনো খোজ খবর তারা নেন না।

কথা হয় আবদুস শুকুরের প্রতিবন্ধি ছেলে শাহীন জমাদ্দারের সঙ্গে। ২৪ বছরের এই যুবক বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। মুক্তিযোদ্ধা কিংবা প্রতিবন্ধী কোঠায় একটা চাকরি পেলে বাবা মা ভাই বোনকে নিয়ে কোন রকম বেচে থাকতে পারতাম।’

শুকুরের স্ত্রী শিরিনা বেগম আবেগতাড়িত কন্ঠে বলেন, ‘মাঝে মধ্যে ছেলের বাবাকে খুলনায় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যেতে হয়। টাকার অভাবে এখন আর নিতে পারছি না। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য সাহায্য করার আবেদন করছি।’

লোহাগড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল হামিদ বলেন,‘বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস শুকুর খুবই অসুস্থ। চলাফেরা করতে পারেন না। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।’

জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, বর্তমান সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছে। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি নির্মাণ করছে, ভাতা বৃদ্ধি করেছে। এই অসুস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য বিশেষ অনুদানের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে সহযোগিতা করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর