খাগড়াছড়ি হানাদার মুক্ত দিবস আজ ১৫ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা খাগড়াছড়ির তৎকালীন মহুকুমা প্রশাসক কার্যালয়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছিলেন।
১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পানছড়ি হয়ে খাগড়াছড়ির দিকে অগ্রসর হন। সে সময় পানছড়িতে পাকিস্তানি বাহিনী ও মিজো বাহিনী অবস্থান করছিল।
সে রাতে মুক্তিযোদ্ধারা পানছড়িতে পাকিস্তানি হানাদারদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরদিন খবর আসে হানাদাররা পানছড়ি ছেড়ে চলে গেছে। ১১ ডিসেম্বর পানছড়ি হানাদার মুক্ত হয়।
১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা খাগড়াছড়ির দিকে রওনা দেয়। পথে ভাইবোনছড়া বাজার এলাকায় পাকিস্তানি হানাদারদের অবস্থান জানতে পেরে, মুক্তিযোদ্ধারা দুই ভাগ হয়ে আক্রমণের পরিকল্পনা নেয়।
ওই দিন ছিল ভাইবোনছড়া বাজারের সপ্তাহিক হাট বার। বাজারে বহু মানুষ ছিল তাই মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণে যায়নি। উল্টো পাকিস্তানি হানাদাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যায় এবং ওই রাতে হানাদারদের ওপর আক্রমণ চালায়।
১৪ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকিস্তানি হানাদাররা ভাইবোনছড়া ছেড়ে খাগড়াছড়িতে পিছু হটেছে। মুক্তিযোদ্ধারা ওই দিন খাগড়াছড়ির দিকে অগ্রসর হলে গাছবান এলাকায় হানাদারদের সঙ্গে আবারও যুদ্ধ হয়। ওই দিনের যুদ্ধ খুব কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়। পাকিস্তানি সেনারা খাগড়াছড়িতে পালিয়ে আসে।
মুক্তিযোদ্ধারা ১৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে খাগড়াছড়িতে প্রবেশ করেন। কিন্তু পাকিস্তানি সেনারা তার আগেই খাগড়াছড়ি ছেড়ে মহালছড়ির দিকে পালিয়ে যায়।
১৫ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ির তৎকালীন মহুকুমা কার্যালয়ের সন্মুখে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। সেই থেকে ১৫ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি হানাদার মুক্ত দিবস হিসেবে পালিত হয়।
খাগড়াছড়িতে পতাকা উত্তোলন করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী। পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ কমান্ডার অশোক চৌধুরী বাবুল, মংসাথোয়াই চৌধুরী, মোবারক মাস্টার, জুলু মারমাসহ অনেক মুক্তিযোদ্ধা।