স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিলেও শিশুদের হাম-রুবেলা (এম-আর) টিকা দেয়ার নতুন সময়সূচি ঘোষণা হয়নি। কিন্তু হবিগঞ্জের হবিগঞ্জ ও মাধবপুর পৌর এলাকায় পৌরসভার নিজস্ব স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে এ টিকা দেয়া হচ্ছে।
এ কর্মীরা অপ্রশিক্ষিত হওয়ায় সঠিকভাবে টিকাটি দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে শিশুরা।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার থেকে শিশুদের হাম-রুবেলা টিকা দেয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। নয় মাস থেকে ১০ বছরের শিশুদের এই টিকা দেয়া হয়। এ বছর হবিগঞ্জ জেলার ৮টি উপজেলা ও ২টি পৌরসভায় মোট পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার ৭৪৬ জন শিশুকে টিকার আওতায় আনা হয়।
কিন্তু গত ২৬ নভেম্বর থেকে বেতনবৈষম্য দূর করাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। যে কারণে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও হাম-রুবেলা টিকা দেয়া স্থগিত করে।
গত রোববার স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও হাম-রুবেলা টিকা দেয়ার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়নি। কবে নাগাদ এই কর্মসূচি শুরু হবে সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারছে না জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশন হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, হবিগঞ্জ ও মাধবপুর পৌরসভায় ভুল পদ্ধতিতে হাম-রুবেলার টিকা দেয়া হচ্ছে। এই টিকা দিতে হয় ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে অর্থাৎ চামড়ার নিচে। কিন্তু টিকা দেয়া হচ্ছে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে গভীর মাংসে। এতে শিশুরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে যাবে।’
পৌরসভা দুটিতে এ টিকা কর্মর্সূচি স্থগিত করে প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে তা শুরু করার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।মাধবপুর পৌরসভার বাসিন্দা এরশাদ আলী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য সহকারীদের এমন কর্মকাণ্ডে যদি শিশুদের ক্ষতি হয়, তাহলে এর দায় কে নেবে?
হাম-রুবেলা টিকা ভুল প্রয়োগ করা হলে কী সমস্যা হতে পারে জানতে চাইলে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বলেন, ‘ভুলভাবে টিকা প্রয়োগ করলে এটি কার্যকরী হবে না। তা ছাড়া যে জায়গায় টিকা পুশ করা হবে সেখানে একটু সংক্রমণ হতে পারে। অর্থাৎ জায়গাটি শক্ত হয়ে যেতে পারে এবং ব্যাথা করবে।’
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্য সহকারীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়ায় খুব শিগগিরই হাম-রুবেলা টিকার কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পৌরসভাগুলোতে সরকারি কোনো স্বাস্থ্যকর্মী থাকেন না। এখানে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন পৌরসভার নিজস্ব স্বাস্থ্যকর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে হবিগঞ্জ ও মাধবপুর পৌরসভা যেসব কর্মী দিয়েছে আমরা তাদের মাধ্যমেই টিকা দিচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের হাম-রুবেলা টিকার প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তবে পৌরসভার কর্মীদের তারা (পৌরসভা কর্তৃপক্ষ) কোনো প্রশিক্ষণ দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই।’