বাড়ি জুড়ে বিয়ের আয়োজন বরগুনা বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের রায় বাড়িতে। নানা সাজে সেজে অগ্নি সাক্ষী রেখে সাতপাকে বাঁধা পড়ার অপেক্ষায় বর-কনে। লাল নীল বাতি জ্বলছে বাড়ি জুড়ে। সম্পন্ন হয়েছে বিয়ের সব আয়োজন।
এরই মধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে বিয়ের পিঁড়ি থেকে পালিয়ে যান বর। এরপর বিয়ে বাড়ি থেকে একে একে সটকে পড়তে শুরু করেন অন্য অতিথিরাও।
কুয়াশাচ্ছন্ন কনকনে ঠান্ডার মধ্যে একেবারে শেষ মুহূর্তে এভাবেই একটি বাল্য বিয়ে বন্ধে করেছে বরগুনার বেতাগী উপজেলা প্রশাসন।
প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের দেশান্তরকাঠী গ্রামের সুনীল রায় তার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেন বৃহস্পতিবার রাতে। শাস্ত্রমতে বিয়ের লগ্ন ছিল বৃহস্পতিবার রাত ৯টায়। উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের এক ছেলের সঙ্গে পরিবারিকভাবে আয়োজন করা হয় এই বিয়ের।
যথাসময়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হয় বর পক্ষ। পুরোহিতের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন বরও। এরই মধ্যে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের কাছে খবর পেয়ে বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয় বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন। তার উপস্থিতি টের পেয়েই ছোটাছুটি শুরু করেন বর ও কনের স্বজনেরা। সবার চোখ এড়িয়ে বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যান বরও।
পরে বিয়ে বন্ধ করে কনের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে উপজেলা প্রশাসন। বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে কনের স্বজনদের অবহিত করেন তারা। এরপর ভুল শিকার করেন কনের স্বজনেরা।
কনের বাবা সুনিল রায় বলেন, ‘বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। আমি এখন বুঝতে পেরেছি। তাই এই মুহূর্তে আমার মেয়ের আর বিয়ে দেবো না। ও এখন পড়ালেখা করবে। তারপর বয়স হলে ওর বিয়ে দেবো।’
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসন তৎপর। অপ্রাপ্ত বয়সে কোথাও কোনো বিয়ের সংবাদ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকি আমারা। আমাদের এ তৎপরতা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’