মুন্সিগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ ১১ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার মুক্ত হয় মুন্সিগঞ্জ। মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধে এই দিন পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে এ অঞ্চলের মুক্তি পাগল মানুষেরা মুন্সিগঞ্জ সদর থানার হানাদার ক্যাম্পে হামলা চালায়। দেশ মুক্ত করার প্রত্যয়ে থানার হানাদার ক্যাম্পে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে জয় বাংলা স্লোগানে ওড়ায় বাংলাদেশের পতাকা।
মুন্সিগঞ্জের যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ চন্দ্র সাহা। সে জন্য তাকে দিতে হয়েছে চরম মূল্য। রাজাকারদের সহযোগিতায় ১৪ মে তার বাবা ও ভাইসহ পরিবারের ১৪ জনকে ধরে নিয়ে জেলা সদরের কেওয়ার এলাকার একটি খালের পাশে নিয়ে একসঙ্গে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করা হয়। আজও সে কথা ভুলতে পারেনি তার পরিবার।
বীর প্রতীক রফিকুল ইসলাম জানান, ৯ মে গজারিয়া উপজেলায় ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা। ফজরের আজানের সময় লঞ্চঘাটে থামে পাকিস্তানি নৌবহর। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হত্যা করা হয় ৩৬০ জন নিরীহ মানুষকে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুজ্জামান আনিস জানান, যুদ্ধের নয় মাস জেলার বিভিন্ন স্থানে চলে ছোট-বড় অভিযান। লৌহজংয়ের গোয়ালী মান্দ্রায় সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের পরাজিত করা হয়। চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে ১১ ডিসেম্বর ভোর থেকে মুক্তিযোদ্ধারা মুন্সিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন দিক থেকে হানাদার বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্যাম্প হরগঙ্গা কলেজ ছাত্রাবাসের দিকে এগোতে থাকেন।
ততক্ষণে বর্বর পাকিস্তানি হায়েনারা বুঝতে পারে তাদের সময় ফুরিয়ে গেছে। দুপুরের আগেই ক্যাম্পের সব দিক ঘিরে ফেলেন মুক্তিযোদ্ধারা। কোনো উপায় না পেয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। শক্রমুক্ত হয় পদ্মা, মেঘনা, ধলেশ্বরী ইছামতি বিধৌত মুন্সিগঞ্জ।
অন্যান্য বছর দিবসটিকে ঘিরে নানা আয়োজন থাকলেও এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে তা সীমিত করা হয়েছে।